সোয়েটার বুনে, কিচেন গার্ডেন করে সংসার চালাচ্ছেন মীনা, পুষ্পারা

বন্ধ চা বাগানে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা

চা-বাগান বন্ধ হওয়ার পর রবিবার গিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন আশ্রিতা খালকো, প্রীতি মুন্ডা, বোলেতা খালকো, মীনা গোয়ানা, পুষ্পা মাঙ্গররা। এই পরিস্থিতিতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।

Advertisement

অনিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০০
Share:

চা-বাগান বন্ধ হওয়ার পর রবিবার গিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন আশ্রিতা খালকো, প্রীতি মুন্ডা, বোলেতা খালকো, মীনা গোয়ানা, পুষ্পা মাঙ্গররা। এই পরিস্থিতিতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তাদের সহায়তায় আশ্রিতা, মীনা, পুষ্পা, কোলেতা, প্রীতিরা এখন সোয়েটার বুনে, জৈব সার উৎপাদন করে বিকল্প আয়ের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন।

Advertisement

প্রায় পনেরো বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে আলিপুরদুয়ারের ঢেকলপাড়া চা-বাগান। আলিপুরদুয়ারের অন্য একটি চা-বাগান বান্দাপানি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দু’বছর হতে চলল। জীবিকা হারানো মহিলা শ্রমিকরা যারা কয়েক পুরুষ ধরে চা-শিল্পের উপর নির্ভরশীল তাঁরা স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন ও বিপণনের হাত ধরে।

বাগানে চালু হয়েছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কয়েক মাসের প্রশিক্ষণে মেয়েরা শিখেছে সোয়েটার, টুপি, মোজা ও মাফলার বোনা। আটটি মেশিনে তিন শিফটে। প্রতি শিফটে আট জন করে কাজ করছেন। আলোকিত এই প্রকল্পের নাম ‘ইনজোত ডহর’। এই নাম আদিবাসীদেরই দেওয়া।

Advertisement

প্রশিক্ষণ ও বিপণনে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জিনেসেপ। কোলেতো খালকো, সুজাতা পান্না, মীনা গোয়ান্না, বরখা মুন্ডারা জানালেন, বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমরা একেবারে পথে বসেছিলাম। কোনও কাজ ছিল না। কখনও আধপেটা খেয়ে কখনও না-খেয়ে কাটিয়েছি। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন জৈব সারের কাজ করে, মেশিনে সোয়েটার বুনে, কিচেন গার্ডেন করে আমরা কিছুটা হলেও সংসার চালাতে পারছি।

ইনজোত ডহরের পাশাপাশি মহিলারা এগিয়ে এসেছে জৈব সার উৎপাদনেও। এই দুই বন্ধ বাগানে বারোটা পিট বানিয়ে এই মার্চেই চালু হয়েছে ভার্মিকমপোস্ট। প্রতি পিটের দায়িত্বে রয়েছেন দশ জন করে মহিলা। পিট প্রতি পাঁচ জনের দল গোবর, গাছের পাতা সংগ্রহ করে প্রাথমিক পচনের কাজে হাত লাগান। অপর পাঁচ জন মহিলা কেঁচো ও পিটের দেখভাল এবং জৈব সারের গুণমান তদারকির দয়িত্ব সামলাচ্ছেন। এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অ্যাকশন এইড, নাবার্ড, কৃষি বিকাশ কেন্দ্র, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও সীমা সুরক্ষা বল। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কলকাতা ও দিল্লির কিছু মহিলা নাগরিক।

জিনেসেপের প্রোগ্রাম অফিসার পারমিতা জানান, প্রাথমিক ভাবে সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দেড়শো জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। অন্যরা ইতিমধ্যে বন্ধ দুই বাগানে পুরুষদের জন্য বিশেষ বিকল্প আয়ের কথা ভেবে মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন