ধৃত তীর্থ। নিজস্ব চিত্র।
জালনোট সমেত অসমের এক যুবককে ধরল সিআইডি কর্তারা। বৃহস্পতিবার রাতে মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই যুবক অসমের কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা তদন্ত করে দেখছে সিআইডি কর্তারা। শুক্রবার ধৃতকে হেফাজতে চেয়ে আদালতে পেশ করেছে গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম তীর্থ সনুওয়াল। তার বাড়ি অসমের ধেমাজির ভাতঘরিয়া গ্রামে। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকার জালনোট। তবে এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা।
গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, জালনোট কারবারের অন্যতম করিডর হল মালদহ। কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকা একাধিকবার জালনোট পাচারের ঘটনায় ধরা পড়েছে পাচারকারীরা। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। তীর্থকে মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে রাজ্য গোয়েন্দা শাখার কর্তারা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভবানী ভবন থেকে গোয়েন্দা বিভাগের সৌগত ঘোষের নেতৃত্বে চার কর্তা হানা দেন মালদহে। রাত ন’টা নাগাদ টাউন স্টেশনের টিকিট কাউন্টার সংলগ্ন এলাকা থেকে অসমের ধেমাজির ভাতঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা তীর্থকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় এক লক্ষ টাকার জাল নোট। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ক’টিই ছিল ৫০০ টাকার নোট। মালদহের বৈষ্ণবনগরের এক জাল নোট কারবারীর কাছ থেকে তীর্থ ওই নোটগুলি পেয়েছে বলে প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছে। এ দিন ধৃতকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়ে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ধৃতকে ভারপ্রাপ্ত সিজেএম কুন্তল ভট্টাচার্যের এজলাসে তোলা হয়েছিল। সিআইডি ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করলে বিচারক ১২ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ধৃত তীর্থকে জেরা করে প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি কর্তারা জানতে পারেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে করে অসম থেকে ফরাক্কা স্টেশনে নামে সে। সেখান থেকে বৈষ্ণবনগরে যায়। তবে বৈষ্ণবনগরে তাকে জালনোট দেওয়া হয়নি। ওই দিনই রাত আটটা নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে এক কারবারী তাকে ওই নোটগুলি দিয়ে আসে। ওই দিনই রাতে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে করে অসম যাওয়ার কথা ছিল তার। তবে তার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দা সূত্রে এও জানা গিয়েছে, অসমের একটি জঙ্গি সংগঠনের এক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তার। এ ছাড়া কার কাছ থেকে ওই নোটগুলি পেয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিআইডির এক কর্তা বলেন, ভিন রাজ্যের কারবারীরা মালদহের জালনোট দিয়ে কারবার চালায়। কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর থেকে উদ্ধার হওয়া জালনোটগুলি খতিয়ে দেখা হয়েছে। ওই নোটগুলির কাগজের মান খুবই উন্নত মানের। সহজে সেগুলি জাল বলে ধরা যায় না। তাই ১০০ টাকার জালনোটের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তাই এই নোট নেওয়ার হিড়িক বেশি কারবারীদের কাছে। ধৃত তীর্থকে জেরা করে পুরো চক্রের হদিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা।