পরীক্ষামূলক উদ্যোগ সফল হয়েছে। এবার বাণিজ্যিকভাবে কোচবিহারে স্ট্রবেরি চাষ শুরু হল কোচবিহারে। জেলা উদ্যানপালন দফতরের পরামর্শে ওই চাষ হচ্ছে। দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে একটি ফার্মার্স ক্লাবের পাশাপাশি ৫০ জন আগ্রহী চাষিকে বাণিজ্যিক ভাবে ওই চাষে নামানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এজন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন হিমাচল প্রদেশ, মহারাষ্ট্র থেকে চারা এনেছেন। ওই দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “পলিথিনের আচ্ছাদনে স্ট্রবেরি চাষ লাভজনক হতে পারে। পরীক্ষামূলক উদ্যোগ সফল হয়েছে। এ বার বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।”
অনেক চাষিই আগে ব্রোকোলি চাষ করতেন। তাঁরা দেখছেন, বাডারে স্ট্রবেরির দর বেশি। তাই সেই দিকে ঝুঁকেছেন।
উদ্যানপালন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছর কোচবিহারে কয়েকজন চাষি পরীক্ষামূলকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করেন। পলিথিনের আচ্ছাদনে ওই চাষ সফল হয়। তাঁরা ভাল ফলন পান। তাতেই উৎসাহী দফতরের কর্তারা বিকল্প চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে স্ট্রবেরি চাষে জোর দেন। দফতরের এক আধিকারিকের ব্যাখা, বাণিজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরির দারুণ চাহিদা রয়েছে। সেই তুলনায় যোগান কম। লাভের সম্ভবনা যথেষ্ট। এক বিঘা জমিতে চাষ সফল হলে পাঁচ মাসে দেড় লক্ষ টাকা আয় হতে পারে।
মাথাভাঙার পচাগড়ের একটি ফার্মাস ক্লাবের উদ্যোগেও দফতরের পরামর্শে ওই চাষ শুরু হয়েছে। ওই ক্লাবের সম্পাদক শেখর রায় বলেন, “গতবছর জমিতে দু’কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়। চারা কেনা, সার সহ মিলিয়ে ৮ হাজার টাকা খরচ। ২৩ হাজার টাকার ফলন বিক্রি হয়েছিল। এ বার দুই বিঘাতে চাষ করা হচ্ছে। হিমাচলপ্রদেশ থেকে ইতিমধ্যে বেশ কিছু চারা আনা হয়েছে।” তুফানগঞ্জের ধলপল ২ এলাকার এক চাষি নরেন্দ্র নাথ দাস বলেন, “আমি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে প্রায় অর্ধেক বিঘে জমিতে স্ট্রবেরি চারা লাগিয়েছি। আগে ওই জমিতে ব্রোকোলি চাষ করতাম। দামও পাচ্ছিলাম। বাজারে স্ট্রবেরির চাহিদা তুলনামূলক ভাবে অনেকটা বেশি।তাই বাড়তি লাভের আশায় ওই চাষে নেমেছি।” দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, শীতের মরসুমে ওই চাষ হয়। নভেম্বরের মধ্যে বা ডিসেম্বরের শুরুতে সাধারণত স্ট্রবেরির চারা লাগান হয়। জানুয়ারি মাসের মধ্যে বাগানে ফুল, লালচে ফল আসতে শুরু করে। দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পলিথনের আচ্ছাদন করে চাষে জমিতে উঁচু মাটির ‘বেড’ করে চারা লাগান হয়। ওই জমি পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। এতে মাটির রস ঠিক থাকে, ভাল হয় ফলনও।