এটিএম জালিয়াতির চক্র ফাঁস, ধৃত ৩

ব্যাঙ্ককর্মীর পরিচয় দিয়ে ফোন করা হয় গ্রাহকদের। তারপরেই কথার ফাঁকে জেনে নেওয়া হয় এটিএম কার্ডের গোপন পিন নম্বর। ওই নম্বর দিয়েই জাল এটিএম কার্ড তৈরি করে ব্যাঙ্ক থেকে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৮:০১
Share:

এটিএম লুঠে ধৃতেরা আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

ব্যাঙ্ককর্মীর পরিচয় দিয়ে ফোন করা হয় গ্রাহকদের। তারপরেই কথার ফাঁকে জেনে নেওয়া হয় এটিএম কার্ডের গোপন পিন নম্বর। ওই নম্বর দিয়েই জাল এটিএম কার্ড তৈরি করে ব্যাঙ্ক থেকে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত। এটিএম জালিয়াতি করে টাকা হাতানোর এমনই এক চক্র ফাঁস করে দিল মালদহের পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজারের রথবাড়িতে। চক্রের তিন চাঁইকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে প্রচুর জাল এটিএম কার্ডও। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ওই এটিএম কার্ড গুলির মালিকের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল মাসিদুর রহমান, মহম্মদ মাসুদ এবং প্রসেনজিৎ পাল। মাসিদুর এবং মাসুদের বাড়ি মানিকচক থানার এনায়েতপুরে। প্রসেনজিৎ পালের বাড়ি দমদমের যশোর রোড এলাকায়। কী ভাবে তাদের পরিচয় হল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে পেশ করে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাতে টহল দেওয়ার সময় ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমের সামনে গাড়ি নিয়ে তিন যুবককে সন্দেহজনক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে এটিএম কার্ড, একটি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ অন্য সামগ্রীও। পুলিশের সন্দেহ ধৃতেরা বড় কোনও চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ধৃতদের জেরা করে আরও তথ্য মিলবে। ঘটনার সমস্ত দিকই আমরা খতিয়ে দেখছি।

এটিএম জালিয়াতির চক্র বছরখানেক ধরেই মালদহে সক্রিয় বলে অভিযোগ। এমন চক্রের ফাঁদে প্রতারণার মুখে পড়েছেন জেলার একাধিক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বহু সাধারণ মানুষ। একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে জেলার থানাগুলিতেও। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে পুলিশ সতর্ক ছিল। এ দিন রাতে টহল দেওয়ার সময় পুলিশ দেখে একটি এসইউভি গাড়ি নিয়ে ইংরেজবাজারের স্টেশন রোডের কার্নি মোড়ে একটি এটিএম মেশিনের সামনে ওই তিন জন দাঁড়িয়ে আছে। ঘণ্টাখানেক বাদে শহরের রথবাড়িতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে আরও একটি এটিএমের সামনে ফের ওই গাড়িটি নিয়ে ওই তিন যুবককে দেখা যায়। তখনই পুলিশ তাদেরকে ধরে নিয়ে গিয়ে জেরা করা শুরু করে। তাদের কথায় অসঙ্গতি দেখে রাতেই গাড়ি-সহ ওই তিন যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তারপরই ধৃতদের জেরা করে উদ্ধার হয় গাড়ি থেকে শতাধিক এটিম কার্ড। তার সঙ্গে ছিল বেশ কয়েকটি পেন ড্রাইভ, পাঁচটি ভোটার কার্ড, লাইসেন্স, আটটি মোবাইল-সহ একটি আগ্নেয়াস্ত্র।

Advertisement

ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছরের ৫ মে ইংরেজবাজারের অমৃতিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয়ে যায়। এই ঘটনায় সঙ্গে মানিকচকের মাসিদুর এবং মাসুদ যুক্ত রয়েছে বলে প্রাথমিক জেরায় জানতে পেরেছে পুলিশ। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রসেনজিৎ এই চক্রের অন্যতম পান্ডা। কীভাবে তারা এটিএম কার্ড গুলি সংগ্রহ করেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। এ জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পুলিশ সাতদিনের হেফাজতের চাইলে ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সুচিত্রা দেব পাঁচ দিনের হেফাজত দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন