ফাইল ছবি।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ওই ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ‘মাস্টার রোলের’ মাধ্যমে কাজে নিযুক্ত কর্মীদের একাংশ বিভিন্ন দাবিতে মিছিল বের করেন। সে সময় প্রশাসনিক ভবনে ঢুকছিলেন রেজিস্ট্রার শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায়। অভিযোগ, আচমকা ওই কর্মীদের কয়েকজন তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। কী দাবি—তা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রারকে ‘ধোলাই হবে পেটাই হবে’ বলে হুমকি দেওয়া শুরু হয়। সে সময় রেজিস্ট্রারকে মারধর করা হয়। মাথায় বাঁশ দিয়ে মারা হয়। কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালে শুভেন্দুবাবুর চিকিৎসা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রেজিস্ট্রার মাথায় চোট পেয়েছেন। পুলিশে জানান হয়েছে।” রেজিস্ট্রার শুভেন্দুবাবু বলেন, “ প্রশাসনিক ভবনের সামনে আচমকা কয়েকজন এগিয়ে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগে হামলা করা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা কোনও সংগঠনের কি না জানা নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, অস্থায়ী কর্মীদের একটি অংশ ‘মাস্টার রোল’ তালিকাভুক্ত। ওই তালিকা অনুযায়ীই তাদের বিভিন্ন কাজ দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে তালিকাভুক্তদের একজনকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তা মানতে না চাওয়া নিয়ে সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রের দাবি, ওই ব্যক্তি ‘ল্যান্ডলুজার’ হিসেবে সুযোগ পান। ‘মাস্টার রোল’ কর্মীদের দাবি মেনে তা করা হয়।
বিরোধীদের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার নিগ্রহে জড়িতরা তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠনের ঘনিষ্ঠ।
প্রাক্তন বনমন্ত্রী সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “গোলমালের ঘটনায় তৃণমূল প্রভাবিতরা জড়িত বলে শুনেছি।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্বেগের ব্যাপার। আমাদের তো নয়ই অন্য বিরোধী দলের কোনও সক্রিয় কর্মী সংগঠন আছে বলেও আমরা জানি না। অভিযুক্তরা তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের বলেই খবর পাচ্ছি। নিরপেক্ষ তদন্তে সব কিছু স্পষ্ট হবে।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “বিরোধীদের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। কয়েকজন অস্থায়ী কর্মী অশান্তি করেছেন বলে শুনেছি। দলের প্রভাবিত কোনও কর্মী বা সংগঠনের সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগসূত্র নেই। বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।” আইএনটিটিইউসির কোচবিহার জেলা সভাপতি প্রাণেশ ধরও বলেন, মাস্টার রোল কর্মীদের কোন সংগঠন তাঁদের নেই।