উদ্ভাসিত: নানা রংয়ের আলোয় সেজেছে সার্কিট বেঞ্চের ভবন। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে। ইনসেটে বিশ্বনাথ সমাদ্দার। ছবি: সন্দীপ পাল।
উদ্বোধনের পরে প্রথম কাজের দিন জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চে বসবেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। প্রশাসন সূত্রে এমনটাই খবর। প্রথম সপ্তাহের পুরোটাই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বসবে জলপাইগুড়িতে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধু প্রধান বিচারপতিই নন, সার্কিট বেঞ্চ চালু হওয়ার পরের ক’দিন আরও দুই বিচারপতির সিঙ্গল বেঞ্চও বসবে সেখানে। গত বুধবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, কোন কোন বিচারপতি কবে কবে জলপাইগুড়ির বেঞ্চে আসবেন, তা প্রধান বিচারপতি নির্দিষ্ট সময় জানিয়ে দেবেন। জলপাইগুড়ির জেলা আদালতের জেলা জজ প্রসেনজিৎ বিশ্বাস সার্কিট বেঞ্চের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। এ দিন জলপাইগুড়ির নতুন জেলা জজের নামও জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার, বিচারপতি মহম্মদ মুমতাজ খান, বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মধুমতী মিত্র জলপাইগুড়ির বেঞ্চে আসছেন। উদ্বোধনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল জলপাইগুড়িতে পৌঁছেছে। সেই দলে চার জন বিচারপতি রয়েছেন বলে সূত্রের খবর। আগামী শনিবার উদ্বোধনের পরে সোমবার থেকে সার্কিট বেঞ্চে কাজ শুরু হয়ে যাবে। সপ্তাহে কত দিন বেঞ্চের কাজ হবে, তা নিয়ে সংশয় ছিল প্রশাসনের। হাইকোর্ট প্রশাসন সূত্রে খবর, সপ্তাহে প্রতিটি কাজের দিনই জলপাইগুড়ি বেঞ্চে শুনানি হবে।
প্রথম দিন কোন মামলার শুনানি হবে, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের অনেকে এর মধ্যে জলপাইগুড়িতে চলেও এসেছেন। সার্কিট বেঞ্চে রাজ্যের একজন অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলও থাকবেন। কলকাতা থেকেই কোনও সিনিয়র আইনজীবীকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। সরকারি আইনজীবীদেরও একটি দল জলপাইগুড়িতে আসছেন। সরকারি প্যানেলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আইনজীবীদের নামও থাকবে। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সব জেলা থেকে নাম চেয়েছেন। জলপাইগুড়ি থেকে সিভিল এবং ফৌজদারি দুই বিভাগের জন্য ১২ জনের নাম পাঠানো হয়েছে। এই বারো জনের মধ্যে চার জন সিনিয়র বা বরিষ্ঠ আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৪১ জন বিচারপতি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা থাকবেন। জলপাইগুড়ি বেঞ্চের আওতায় থাকা দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পঙের জেলা আদালত তো বটেই, অন্যান্য আদালতের বিচারকরাও থাকবেন। রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে মঞ্চে অনুষ্ঠানে যেন কোনও ভুলক্রুটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আজ শুক্রবার সকালে একবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মহড়াও দেওয়া হবে মঞ্চে।
সাজসজ্জা শেষ। পরের বিচার বিভাগীয় কাজের পরিকল্পনাও হয়ে গিয়েছে। এখন তাই জলপাইগুড়ি শহরের তর সইছে না। দিন নেই রাত নেই, অস্থায়ী ভবনের সামনে এখন ভিড়। দিনের বেলায় কাজের লোকজনে গমগম করছে এলাকা। রাতে আলো ঝলমলে ভবনটি দেখতেও অনেকে আসছেন।
এই অবস্থায় যে কোনও আলোচনার কেন্দ্রে এখন সব থেকে বেশি বার যে প্রশ্নটি উঠছে, প্রথম দিন কেমন হবে শুনানি? প্রথম মামলাই বা কী উঠবে?
সকলেই তাই ৯ তারিখে উদ্বোধনের পাশাপাশি তাকিয়ে রয়েছেন ১১ তারিখ প্রথম কাজের দিনের দিকেও।