দক্ষিণের পরে এ বার উত্তর। দলের অন্দরে মুকুলের ‘পরিচয় পর্ব’ সেরে ফেলতে আগামী বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে আসছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং মেলে মুকুল রায়কে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সে দিনই দিল্লি থেকে উড়ে আসবেন রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশ। উত্তরবঙ্গের সাত জেলার দলের পদাধিকারীদের শিলিগুড়িতে তলব করা হয়েছে সেদিন। তবে নিছকই পরিচয় পর্ব নয়। পঞ্চায়েতে কত বুথে সংগঠন রয়েছে, কত জন সক্রিয় সদস্য, কোন বুথে সংগঠন নেই সে সব বিস্তারিত রিপোর্টও সঙ্গে আনতে বলা হয়েছে। এলাকার কোন কোন তৃণমূল নেতারা ‘বসে’ গিয়েছে, কে ক্ষুব্ধ তার তালিকাও জেলা নেতাদের পকেটে রাখতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে-পরে মুকুলবাবু উত্তরবঙ্গের অনেক নেতা-জনপ্রতিনিধি সহ কয়েকজন বিধায়কের থেকেও শুভেচ্ছা বার্তার ফোন-এসএমএস পেয়েছিলেন বলে অনুগামীদের দাবি। বহু বুথের নিচুতলার কর্মীরা ‘পাশে’ থাকার কথাও জানিয়েছিলেন। আদৌও তাদের সকলকে পাশে পাওয়া যাবে কিনা সেই ‘জল মাপার’ কাজও হবে মুকুলবাবুর চলতি সফরে। বিজেপির সঙ্গে কোনও সংস্রব নেই এমন অনেককেই মুকুলবাবু দেখা করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন বলে খবর। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘মুকুলবাবুর ইচ্ছেতেই এই সভার প্রস্তুতি হয়েছে। রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। উত্তরের বিভিন্ন জেলার পদাধিকারীদের সঙ্গে মুকুলবাবু পরিচিত হবেন এবং পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি কী ভাবে হবে, তা নিয়ে পরামর্শও দেবেন।’’
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই মুকুল-সফর শুরু হয়েছে। গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে উত্তরবঙ্গে মুকুলের আসা এই প্রথম। সফরে কড়া নজর রাখছে তৃণমূলও। আগেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে মুকুলই যোগাযোগ রক্ষা করতেন। তৃণমূলে বিমুখ একটি প্রভাবশালী জনজাতি গোষ্ঠীকে মুকুলই মধ্যস্ততা করে লোকসভা ভোটের আগে তাঁদের সমর্থন আদায় করেছিলেন। সেই সব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মুকুলের যোগাযোগ রয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে জনজাতিদের কয়েকটি গোষ্ঠীর সঙ্গে মুকুল রায়ের আলোচনা করার কথা রয়েছে বলে খবর।
সে কারণে মুকুলবাবুর সফর ঘিরে তৃণমূল নেতারাও কৌতুহলী। উৎসুক মুকুল শিবিরও। তাঁদের দাবি ইতিমধ্যেই ভাল সাড়া মিলেছে। এক তৃণমূল নেতাই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সভাস্থলে যাওয়ার গাড়ির ব্যবস্থা করে রেখেছেন বলে খবর। উত্তরের প্রতিটি জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ তিনজনকে ডাকা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মুকুলকে ফের জেলায় জেলায় পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কবে কোন জেলায় মুকুলবাবু যাবেন, তার দিনক্ষণও শিলিগুড়ির বৈঠক ঠিক হবে।