লোকশিল্পীরা কেন প্রচারে, প্রশ্ন চোপড়ায়

লোকশিল্পীদের এই ভাবে প্রকাশ্য ভোটের প্রচারে নামায় বিরোধীরা প্ৰশ্ন তুলেছেন। রবিবার বিকেলে দু’টি সভায় উপস্থিত ছিলেন চোপড়ার তৃণমুল বিধায়ক হামিদুল রহমান।

Advertisement

মেহেদি হেদায়তুল্লা

চোপড়া শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১১:২৮
Share:

বিতর্কে: গেয়ে ভোটের প্রচার লোকশিল্পীদের। নিজস্ব চিত্র

ভোটের প্রচারে লোকশিল্পীদের সরাসরি কাজে লাগানোয় রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রবিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার দাসপাড়া, মাঝিয়ালি, এলাকায় একঝাঁক লোক শিল্পী শাসকদলের মঞ্চে দলীয় প্রার্থীদের জেতানোর জন্য গানের মাধ্যমে ঝড় তুললেন। তেমনই ভাষণে ব্যাখ্যা করে বক্তারা বলে দিলেন কেন তাঁরা শাসকদলের প্রাথীদের সমর্থনে প্রচার করছেন।

Advertisement

আর লোকশিল্পীদের এই ভাবে প্রকাশ্য ভোটের প্রচারে নামায় বিরোধীরা প্ৰশ্ন তুলেছেন। রবিবার বিকেলে দু’টি সভায় উপস্থিত ছিলেন চোপড়ার তৃণমুল বিধায়ক হামিদুল রহমান। হামিদুল বলেন, ‘‘লোকশিল্পীরা স্বেচ্ছায় প্রচারে নেমেছেন। কোন দলের হয়ে তাঁরা প্রচার করবেন, তা স্থির করার গণতান্ত্রিক অধিকার তাঁদের রয়েছে।’’

কিন্তু উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তর দাবি, ‘‘ভাতা দেওয়া খুবই ভাল উদ্যোগ। তাই বলে সরকারি ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে নিজের দলে ব্যবহার করা তো শিল্পীদের অপমান।’’ সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য আনোয়ারুল হকও বলেন, ‘‘লোকশিল্পীরা সরাসরি দলের হয়ে প্রচারে। শিল্পীদের এই ভাবে অপমান করছে শাসক দল।’’

Advertisement

বিজেপি নেতারাও এই নিয়ে সরব হন। দলের জেলা সম্পাদক নির্মল দাম বলেন, ‘‘শিল্পীদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে এই ভয় দেখিয়ে দলের হয়ে প্রচারে কাজে লাগিয়েছে শাসক দল।’’ জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর জানাচ্ছে, উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রায় ১৪ হাজার লোক প্রসার প্রকল্পের নথিবদ্ধ। লোকশিল্পীদের আয় বাড়ানোর জন্য সরকার চেষ্টা করেছে। লোকশিল্পীদের যাতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্থানীয় ক্লাব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা কাজ দেন, তার জন্য প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সরাসরিভাবে দলের প্রচারে তাঁদের আনা হচ্ছে কার নির্দেশে, সেই প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

লোকপ্রসার শিল্পী সঙ্ঘের উত্তর দিনাজপুরের সহ সম্পাদক সুবল গোপ জানান, ‘‘আমরা চোপড়ার ৫০০ শিল্পী সরাসরি তৃণমুলের সমর্থনে প্রচার করছি। আমার গানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার প্রকল্পগুলো তুলে ধরছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘দিদিই একমাত্র আমাদের দুঃখ-কষ্ট দেখেছেন। তিনি আমাদের মতো দুঃস্থ অসহায় লোকশিল্পীদের জন্য ভাতা চালু করেছেন। সরকারি অনুষ্টানে আমাদের দিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নেন। দিদির এই ইচ্ছেটাইকে আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। তাই আমরা সিদ্বান্ত নিয়ে দিদির দলের প্রার্থীদের জেতানোর জন্য প্রকাশ্য নেমেছি। এতে আপত্তির কিছু নেই।’’

তৃণমূলের চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল বলেন, ‘‘লোকশিল্পীদের কোনও রকম চাপ দেওয়া হয়নি। শিল্পীদের আমরা সম্মান করি। কিন্ত বিরোধীরা মিথ্যা অপ্রচার করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন