জখম: অধীর রায়। নিজস্ব চিত্র
মনোনয়নকে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বিডিও অফিস চত্বর। শুক্রবার দুপুরে সেখানে শাসক দলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিডিও অফিসের ঘেরাটোপের মধ্যে লাঠির আঘাতে সিপিএমের ৩ জন এবং বিজেপির ৪ জন জখম হন। পরে সদর রাস্তা এলাকায় পাল্টা হামলায় তৃণমূলের এক কর্মী জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ।
আহতদের গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সিপিএম কর্মী অধীর রায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মাথা ফেটেছে। ঘনঘন বমি করায় তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়েছে। অল্প আহত আরও ৬ জন বিরোধী দলের কর্মীকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরপরই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সিপিএম কর্মী সমর্থকরা গঙ্গারামপুরের চৌপথীতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালে পুলিশ গিয়ে সিপিএমের জেলা নেতা সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। তাতে উত্তেজনা তৈরি হয়। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘অশান্তি রোধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
এ দিন, দুপুর দু’টো নাগাদ বিডিও অফিস চত্বর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেসের অভিযোগ, পাহারায় যে পুলিশকর্মীরা ছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দিয়ে একদল তৃণমূলকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে বিরোধী দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ চালান।
পুলিশ সিপিএমের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অচিন্ত্য চক্রবর্তী এবং প্রহৃত অধীর রায়কে গ্রেফতার করায় ক্ষুব্ধ সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, ‘‘মাথা ফেটে গুরুতর জখম হন অধীর। তারপরেও তাঁকে পুলিশ চুলের মুঠি ধরে হেঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়। বমি করছে দেখে পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়েছে। পথ অবরোধ থেকে জেলা নেতা অচিন্ত্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অথচ যারা সশস্ত্র হামলা চালাল তাদের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করেনি।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রর পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম এবং বিজেপি একসঙ্গে মিলে দৌরাত্ম্য চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের পার্টি অফিসের সামনে আমাদের জাহাঙ্গিরপুর এলাকার এক বয়স্ক কর্মীর উপর হামলা করা হয়। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ নারায়ণবাবু অবশ্য সেই দাবি অস্বীকার করেছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ নীরব দর্শক।’’