হামলার নালিশ, ‘গোপন’ ডেরায় বিজেপি প্রার্থীরা

কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “প্রার্থীরা সরে থাকায় তাঁদের আত্মীয়দের উপরে হামলা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে বাড়ি ফিরে না আসলে বড় ক্ষতি করে দেওয়া হবে। পাহারা দিয়ে কতক্ষণ রাখা যাবে বুঝতে পাচ্ছি না।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:০৬
Share:

কাঁথির একটি দোকানে বিকোচ্ছে সব দলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র

কারও বাড়িতে হামলা হয়েছে। কারও খোঁজে বার বার বাইক বাহিনী ঘুরছে বাড়ির চারপাশ দিয়ে। এমনটা যে হবে সে আঁচ আগে থেকেই করেছিলেন পার্টির নেতারা। তাই দলের কর্মীদের জন্য ‘গোপন ডেরা’ তৈরি করে রেখেছিল বিজেপি।

Advertisement

এখন সেখানে বসেই গ্রামের খোঁজ রাখছেন পঞ্চায়েত ভোটের বিজেপি প্রার্থীরা। ফোন ধরছেন হিসেব করে। কখনও কখনও মোবাইল সুইচ বন্ধ করে রেখেছেন। সেই গোপন ডেরার মধ্যে একটি বিজেপির জেলা পার্টি অফিস। সেখানে পালা করে পাহারা দিচ্ছেন দলের কর্মীরা। বিজেপির অভিযোগ, সেখান থেকেও প্রার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল। বাইক ও ছোট গাড়ি নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি পার্টি অফিসের আশপাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করছে বলে অভিযোগ।

কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “প্রার্থীরা সরে থাকায় তাঁদের আত্মীয়দের উপরে হামলা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে বাড়ি ফিরে না আসলে বড় ক্ষতি করে দেওয়া হবে। পাহারা দিয়ে কতক্ষণ রাখা যাবে বুঝতে পাচ্ছি না।” তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোথাও বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। উল্টে আমাদের এক অঞ্চল নেতাকে কুপিয়ে খুন করেছে বিজেপি কর্মীরা। নিজেদের প্রার্থীদের উপরে ভরসা রাখতে না পেরেই তাঁদের হয়তো গোপন ডেরায় নিয়ে রেখেছে।”

Advertisement

কোচবিহারে জেলা পরিষদের সব আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে তাঁরা। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থীর সংখ্যা একটু কম রয়েছে। কিন্তু সেখানেও ষাট শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। অভিযোগ, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের দিন শুরু হতেই বিজেপি প্রার্থীদের উপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দিনহাটার জেলা পরিষদের এক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই তিনদিন এলাকায় ফিরব না। এর পরেও ফিরে কয়দিন থাকতে পারব জানি না। কারণ প্রচারে বেরোলেই হামলা হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুফানগঞ্জের এক পঞ্চায়েত প্রার্থী বলেন, “জমির ধান কাটতে দেওয়া হবে না। দোকান থেকে খরচ নিতে দেওয়া হবে না। এমন ফতোয়া দিয়েছে তৃণমূল নেতারা। তার পরেও ঝুঁকি নিয়ে গোপন আস্তানায় চলে এসেছি। দেখি কতদূর পর্য়ন্ত লড়াই করতে পারি।”

বিজেপি সভাপতি বলেন, “বলরামপুরের এক বিজেপি প্রার্থীর দোকান ভাঙচুর হয়েছে। প্রায় তিরিশ জন তৃণমূল কর্মী তাঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে যদি মনোনয়ন না তুলে নেয় তাহলে তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে। আর কোনওদিন এলাকায় ফিরতে দেওয়া হবে না। তিনি আপাতত পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন।” তৃণমূল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন