ফের-গুলি: চোপড়ায় গুলিবিদ্ধ হলেন আরও একজন। এলাকার মানুষের উদ্বেগ কাটছে না। নিজস্ব চিত্র
ভোটের আগে থেকে শুরু হয়েছিল গুলি, বোমার উপদ্রব। ভোটপর্ব মিটে গিয়ে এ বার পঞ্চায়েত গঠনের পালা। কিন্তু উত্তেজনা এখনও কাটেনি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়। মঙ্গলবার দুপুরে চোপড়ার লক্ষ্মীপুরের ডাঙাপাড়া এলাকাতে ফের গুলি চলল। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘আর কতদিন এমন চলবে? কবে মিটবে এই গোলাগুলি?’’ কেউ প্রশ্ন করছেন, ‘‘কোথা থেকে নিয়মিত আসছে এত আগ্নেয়াস্ত্র?’’ প্রশাসন দাবি করছে, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কড়া নজরদারি রয়েছে। এলাকার মানুষের প্রশ্ন, ‘‘তাই যদি হবে, তা হলে কী করে পরপর গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটছে?’’
এ দিন এলাকায় ঢুকে কংগ্রেসের কর্মীদের উপর হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। গুলি ও বোমার পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র নিয়েও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, চোপড়ার লক্ষ্মীপুরের ডাঙাপাড়া এলাকার এক প্রবীণা বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার শেষকৃত্যের দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এলাকার লোকেরা। সেই সময় হঠাৎই এক দল দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকে যথেচ্ছে বোমা গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। এলাকার কংগ্রেসের প্রার্থী মহম্মদ হুসেনের বাড়িতেও হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাঁর বাড়িতে আগনও লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ ওই গ্রামের ঢুকে এলাকার লোকেদের উপর হামলা চালায়। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন মহম্মদ জাহাঙ্গির নামে এক ব্যক্তি। তাঁর চোখে গুলি লেগেছে।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন এলাকাতে এক হাতুড়ে চিকিত্সক আব্দুল রহমানও। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের ইসলামপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। আবদুল রহমানের ছেলে এক্রামুলের কথায়, ‘‘আমরা সাধারণ ভোটার। এ দিন প্রায় এক শতাধিক লোক ক্যানেলের ধার দিয়েই গ্রামে ঢোকে। সেখানে হঠাতই হামলা চালায়। গুলি করে। ধারালো অস্ত্র দিয়েই হামলা করে। বাবার উপর পিস্তল তাক করেছিল। বাবা বলেছিলেন গুলি কোরো না। তখন ধারালো অস্ত্র দিয়েই হামলা চালায়।’’
চোপড়ার কংগ্রেস নেতা অশোক রায়ের কথায়, ‘‘এলাকায় বারবারই উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে। আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। তাঁদের গুলি করা হচ্ছে। এলাকাতে আইন ব্যবস্থা বলে কিছু নেই।’’ তবে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, ‘‘এলাকার পঞ্চায়েত অফিস চার দিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে কংগ্রেস। পুলিশকে প্রশাসনকে দিয়েই তা দখল মুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। উল্টে পুলিশ বাহিনী আমাদের কর্মীদের মারধর দিয়েই সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এই উত্তেজনা যখন তৈরি হয়েছিল ঠিক তখনই কিছু কংগ্রেস কর্মী নিজেদের একটি রান্নাঘরে আগুন লাগিয়ে, নিজেদের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’’ ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কয়েক জনকে জিঞ্জাসাবাদ করা হচ্ছে।’’