শাসকের দ্বন্দ্বে তপ্ত দিনহাটা

ভোটপর্ব শুরু হতেই দলের যুব সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষের ঘটনা বার বার প্রকাশ্যে এসেছে দিনহাটায়। এমনকী তৃণমূলের এক কর্মী খুনের ঘটনাতেও মামলা দায়ের হয়েছে যুব নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।

Advertisement

কোচবিহার

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:১৯
Share:

বিধ্বস্ত: মাথাভাঙার বৈরাগির হাটে বিজেপি প্রার্থীর ভাঙচুর হওয়া বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত দিনহাটা। অভিযোগ, তৃণমূলের যুব সংগঠনের সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর বিবাদেই এই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়িতে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গুলি-বোমা ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে। দিনহাটার এসডিপিও কে উমেশ গণপতের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। পুলিশ অবশ্য গুলি-বোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে। এসডিপিও বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ঘটনা যারাই ঘটাক না কেন, পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”

ভোটপর্ব শুরু হতেই দলের যুব সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষের ঘটনা বার বার প্রকাশ্যে এসেছে দিনহাটায়। এমনকী তৃণমূলের এক কর্মী খুনের ঘটনাতেও মামলা দায়ের হয়েছে যুব নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। সব নিয়ে দলে একটা অস্বস্তির বাতাবরণ চলছিল। মিথ্যে মামলার অভিযোগ তুলে পাল্টা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই রাস্তায় নামে যুবরা। এই অবস্থায় যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে দলের পক্ষেই সওয়াল করেন। তিনি বলেন, “দল যাদের প্রার্থী করেছে তাঁদের হয়েই যুব সংগঠন প্রচারে নামবে। বাকি কেউ যদি যুব সংগঠনের সদস্য আবেগতাড়িত হয়ে মনোনয়ন জমা দেন, তাঁদের কাছে তা প্রত্যাহারের আবেদন করি।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “মামলার বিষয়টি আইনের ব্যাপার। তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে পুরো পরিস্থিতি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। যা ব্যবস্থা নেওয়ার রাজ্য নেতৃত্ব নেবে।”

Advertisement

সেই সঙ্গে এ দিন আলাদা ভাবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতিও দলের কর্মীদের কাছে প্রার্থীদের হয়েই প্রচারে নামার আবেদন করেন। দলের নির্দেশের বাইরে যে সব তৃণমূল কর্মী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাঁদের কাছে তা প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি। এই দুই আবেদনের মধ্যেই নতুন করে গণ্ডগোল ছড়িয়ে পড়ে। ভেটাগুড়ি ২ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি সুনীল রায় সরকার অভিযোগ করেন, যুব কর্মীরা বাইক মিছিল নিয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। ঘরের ভিতরে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করা হয়। ওই অঞ্চলের বিদায়ী প্রধান গোলাপী রায় সরকারের বাড়িতেও একই ভাবে ভাঙচুর হয়। এমকি তাঁর রান্না ঘরে ঢুকে খাবারের জিনিস পর্য়ন্ত ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যুব তৃণমূলের দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের আহ্বায়ক নারায়ণ শর্মা দাবি করেন, ঘটনায় যুব তৃণমূল জড়িত নয়। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় টাকা দিয়ে টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে শুনেছি। তা নিয়ে দলের পুরনো কর্মীরা অনেকেই বিক্ষুব্ধ। তাঁদের সঙ্গে কোনও গণ্ডগোল হতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন