বন‌্ধের দিনে ওষুধ-পথ্য কিনতে ধার করতে হল টাকা

রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক ভীমনারায়ণ মিত্রের ওষুধ কেনার জন্য পাঁচ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২২
Share:

ভোগান্তি: বন্‌ধে বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। এটিএম-ও। সাধারণ মানুষ পড়লেন খুবই দুর্ভোগে। নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক ভীমনারায়ণ মিত্রের ওষুধ কেনার জন্য পাঁচ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল। মঙ্গলবার থেকে টাকা তোলার জন্য শহরের শিলিগুড়ি মোড় থেকে কসবা ও জেলখানা মোড় পর্যন্ত বেশিরভাগ এটিএম বন্ধ ছিল। বুধবার মোহনবাটী এলাকার কয়েকটি এটিএম খোলা থাকলেও সেগুলোতে টাকা মেলেনি। ফলে এদিন বাধ্য হয়ে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা ধার নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘দু’দিন ধরে টাকা তুলতে এমন দুর্ভোগ তো নোটবন্দির সময় হয়েছিল। এটিএম খোলা থাকলেও সে সময় টাকা মিলছিল না। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের স্বার্থের জন্য বন‌্ধ ডাকছে আর তাঁদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে নেতৃত্বরা সেটা বুঝতে পারছেন না?’’

Advertisement

কয়েকটি এটিএম খোলা থাকলেও সেগুলোতে টাকা ছিল না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। অন্য জায়গার মতো উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও ব্যাঙ্ক, এটিএম বন্ধে ভুগতে হল ভীমনারায়ণবাবুর মতো প্রচুর সাধারণ মানুষকে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার ব্যবসায়ীরাও। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক অতনূবন্ধু লাহিড়ী বা পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাসের সম্পাদক জয়ন্ত সোমদের দাবি, দুই দিনের বন্‌ধে খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে বেশি।’’ অন লাইনেও ব্যাঙ্কে টাকা লেনদেনও সম্ভব হয়নি বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। জাতীয় সড়কে অনেক ট্রাক আটকে রয়েছে। পণ্য আসেনি। কয়েক কোটি টাকার লেনদেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রায়গঞ্জের সুপারমার্কেট এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘ব্যাঙ্ক খোলা থাকলে এক দিনে কম পক্ষে এককোটি টাকার লেনদেন হয়। তা ছাড়া ব্যাঙ্কে অনেক গ্রাহক থাকেন। তাই ব্যাঙ্ককর্মী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তা এবং ব্যাঙ্কের টাকা সুরক্ষিত রাখতেই যে কোনও বন্‌ধে ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখা হয়।’’

Advertisement

এদিন রায়গঞ্জ থেকে জেলা সহ বিভিন্ন রুটের লোকাল ও দুরপাল্লার সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। দুপুরের পর থেকে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও হেমতাবাদ, ইসলামপুরের বিভিন্ন এলাকার সমস্ত দোকানপাট খুলে যায়। বন্‌ধ প্রভাব তেমন ছিল না। বিভিন্ন রুটের সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। ইসলামপুরের পোস্টঅফিস ছিল সকাল থেকেই ছিল বন্ধ। এ দিন সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের বন্‌ধের সমর্থনে কোথাও মিছিল করতে দেখা যায়নি। তবে মঙ্গলবার ইটাহারে ট্রাক ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত ধৃত সিপিএমের চার কর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ দিন বিকালে রায়গঞ্জ শহরে মিছিল করে বামেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন