বিনয়: বাগডোগরা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তাঁদের ‘হৃদয়ে’। তাই নিয়েই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে পাহাড়ে উন্নয়নের কাজ চালাচ্ছেন বিনয় তামাংরা। এ বারে বিনয়ের মুখে শোনা গেল ‘শিডিউলড এরিয়া’ বা তফসিলভুক্ত এলাকার দাবি। সোমবার দিল্লি থেকে ফেরার পথে বাগডোগরায় বসে তিনি জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মতো উত্তরবঙ্গের কিছু অংশ এবং জিটিএ এলাকাকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, জিএনএলএফ প্রতিষ্ঠাতা সুবাস ঘিসিংও এক সময়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি থেকে সরে এসে পাহাড়কে ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত করার দাবি তুলেছিলেন। দিল্লিতে সেই বৈঠক সেরে শিলিগুড়িতে ফেরার পরে তাঁকে পাহাড়ে উঠতে বাধা দেন মোর্চার তৎকালীন প্রধান বিমল গুরুং।
বিনয় অবশ্য এ দিন ষষ্ঠ তফসিলের কথা স্পষ্ট করে বলেননি। তিনি বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড নামে আলাদা রাজ্য যখন ঘোষণা হচ্ছে না, তখন দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকা নিয়ে ‘শিডিউল এরিয়া’ বা তফসিলিভুক্ত এলাকা বলে ঘোষণা করতে হবে। আমরা এই দাবিতে আন্দোলন করব।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, গুরুংয়ের নেতৃত্বে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু বিনয় ক্ষমতায় আসার পর আলাদা রাজ্যের দাবিকে ‘হৃদয়ে’ রেখেই দাবিদাওয়া আদায়ে লড়াই চলবে বলে বহু বার জানিয়েছেন। আলাদা রাজ্য কী ভাবে তৈরি করা সম্ভব, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার কথাও বিনয়রা বলেছেন। এই অবস্থায় পাহাড় তো বটেই, উত্তরবঙ্গের একাংশকেও নিয়ে আলাদা ‘শিডিউলড’ এলাকা ঘোষণা করার দাবি তুললেন। মোর্চার নেতারা জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি কেন্দ্রের তরফে বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা, কর ছাড়ের মতো সুযোগ পেয়ে থাকে। বিনয় তামাং সেই কথাই বলেছেন।
বিমানবন্দরে বিনয় বলেন, ‘‘রবিবার দিল্লিতে আমাদের দলের ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে আমরা দীপাবলির পর দিল্লিতে সমর্থকদের নিয়ে গিয়ে ধর্না আন্দোলনে বসব। সেখানে আলাদা শিডিউল এরিয়ার দাবিও থাকবে।’’
রবিবার মোর্চার ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন করতে দিল্লিতে যান বিনয় তামাং ও তার কিছু সমর্থক। দিল্লির সিরি ফোর্ট অডিটোরিয়ামে তারা সভা করতে গেলে সেখানে বিমল গুরুংপন্থীদের সঙ্গে তাদের বচসা হয়। ঘটনার জেরে সেখানে উত্তেজনা দেখা দিলে বিনয় তামাং ও তাঁর সমর্থকদের পুলিশ সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
রাজ্য বিজেপির বক্তব্য, গুরুংই আদত মোর্চা প্রধান। বিনয় রাজ্য সরকারের লোক। তাই তাঁর বৈঠক করার অধিকার নেই।