উদ্বিগ্ন: বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সন্দীপ পাল
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসার মুখেই তাঁকে পরিয়ে দেওয়া হল গেরুয়া খাদা। কোনওক্রমে সেটা গলায় জড়িয়ে নিলেও কারও দিকে তাকাচ্ছিলেন না বিশেষ। ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা তাক করা হলে হাত নেড়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। থমথমে শরীরী ভাষার পিছনে কি তা হলে বিজনবাড়ি কলেজ হাতছাড়া হওয়ার দুশ্চিন্তাই কাজ করছে?
সেটাকেও যেন হাত নেড়ে উড়িয়ে দিতে চাইলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বললেন, ‘‘টাকা আর সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভোট কিনেছে তৃণমূল।’’ বললেন, ‘‘পাহাড়ে নেতাদের কেনা হচ্ছে। তবে এর প্রভাব পুরভোটে পড়বে না।’’
দিল্লি গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করতে। বৃহস্পতিবার সেই বৈঠক সেরে বেরিয়েই খবর পান বিজনবাড়ি কলেজে পতনের। শুক্রবার দুপুরে সপার্ষদ এসে নামেন বাগডোগরায়। তার পর সোজা নিজের ঘাঁটি পাহাড়ে।
এর মধ্যেই তৃণমূল এবং অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কটাক্ষ। বললেন, ‘‘উনি (অরূপ) ব্যক্তিগত স্বার্থে লড়াই করতে আসছেন। আমি পাহাড়ের নেতা, পাহাড়ের ছেলে। নিজের জাতির জন্য লড়াই করছি। নেতানেত্রীরা টাকায় বিক্রি হলেও ক্ষতি নেই। মানুষ আমাদের পাশে আছে। চারটি পুরসভাতেই জিতে দেখাব।’’
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে মাস দু’য়েকের মধ্যে পাহাড়ের মিরিক, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কার্শিয়াঙে পুরভোট হবে। তৃণমূলের পাহাড়ের পর্যবেক্ষেক অরূপবাবু গত কয়েক দিন ধরে পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়ে থেকে কলকাতায় ফিরেছেন। আগামী সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফর। তার আগে বিজনবাড়িতে জয় নিঃসন্দেহে তৃণমূলকে নতুন করে অক্সিজেন জোগাবে। সম্প্রতি মিরিকেও মোর্চার কেন্দ্রীয় দুই নেতা তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। দলে একের পর ভাঙন এবং কলেজ ভোটে হারের পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি মোর্চার পায়ের তলায় মাটি আলগা হচ্ছে?
মোর্চা সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কলেজ ভোটে হারের কারণ ছাড়াও পুরসভা ভোট নিয়ে বৈঠকে বসবেন গুরুঙ্গ। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হল তাঁর? গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘অতীতে শিলিগুড়ি, বীরপাড়ার সভায় গোর্খাদের সমস্যা মেটানোর কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারেও সেই আশ্বাস দিয়েছেন। উনি পাহাড়ের মানুষের পাশে আছেন। আমরাও প্রস্তুত। টাকা দিয়ে যুবকদের বিভ্রান্ত করে তৃণমূল কিছুই করতে পারবে না।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের পাহাড় কমিটির মুখপাত্র বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘যে দলটা দুর্নীতি আর মিথ্যার উপর টিঁকে আছে, তাদের আবার কথা! মানুষ সব বুঝতে পারছেন, তাই পাহাড় মমতাময় হয়ে উঠেছে। তাই পাহাড়ে আগামী প্রতিটা নির্বাচনে এমনই ফল হবে।’’