চিন্তিত: গুরুঙ্গ। নিজস্ব চিত্র
এ বার পাহাড়ের ভোটে বিরোধী শূন্য পুরসভা হবে না বলে স্বীকার করে নিলেন খোদ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গই। রবিবার দুপুরে সিংমারির অফিসে বসে বললেন, ‘‘পাহাড়ে ৪টে পুরসভা জিতব। তবে কালিম্পং ও মিরিকে কিছু আসন বিরোধীরা পাবে। গণতন্ত্রের জন্য তা ভালই। আমরা কী কাজ করব, তাঁরাও পুরসভায় বসে দেখবেন।’’
দিনভর পাহাড়ে কোনও গোলমাল হয়নি। পর্যটকেরা নির্বিঘ্নেই ঘুরেছেন। সকাল থেকে দার্জিলিং ছিল বৃষ্টিভেজা। তবুও ম্যাল চৌরাস্তায় পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে।
তবে সকাল থেকে অবশ্য যথেষ্টই চিন্তিত ছিলেন গুরুঙ্গ। সকাল ৭টা নাগাদ পাতলেবাস থেকে সোজা চলে যান মহাকাল মন্দিরে। ছাই রঙের ট্র্যাক স্যুট, খয়েরি রঙের জুতোয় গুরুঙ্গকে সকাল থেকেই ঘনঘন ফোন করতে দেখা গিয়েছে। তিলক কেটে পুজো দিয়ে আসেন সিংমারি পার্টি অফিসে। ৪টি শিঙ্গারা, ৩টি জিলিপি আর চা দিয়ে উপোস ভাঙেন। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা ডেকেছিলাম। উনি পরির্বতন উন্নয়নের কথা বলে এসেছিলেন। এখন এখানে যা করছেন, তা মা করে না। বিভাজন, দখল, কফিনে ভরে আমাদের পাহাড় ছাড়ার কথা হচ্ছে। তাই মহাকালে গিয়ে পুজো দিয়ে পাহাড়বাসীর মঙ্গল কামনা করলাম।’’
মমতাকে এ দিন হিটলারের সঙ্গেও তুলনা করেছেন বিমল। তিনি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা ভাল বললেও তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। হুমকি, টাকা বিলির অভিযোগই বেশি করেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বুদ্ধবাবু, জ্যোতিবাবুর আমলে কি কোনও দিন পাহাড়ে এ সব হয়েছে? পাহাড়ের মানুষ তৃণমূলের ভূমিকায় দুঃখ পেয়েছে।’’
২০১১ সালে ৩২টি ওয়ার্ডেই নিরঙ্কুশ ভাবে জেতে মোর্চা। এ বারই প্রথম তৃণমূল সক্রিয় ভাবে ময়দানে নামায় ভোট দেখছে পাহাড়।
তৃণমূলের নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই প্রথম দার্জিলিঙে গণতন্ত্র উচ্ছ্বসিত। মানুষ যা রায় দেবেন আমরা তা মাথা পেতে নেব। মা মাটি মানুষই আমাদের ভরসা।’’ তৃণমূলের দার্জিলিঙের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘উৎসবের মেজাজে পাহাড়ে গণতান্ত্রিকভাবে ভোট হয়েছে। পর্যটকেরাও নির্বিঘ্নে ঘুরছেন। আমরা এটাই চাই।’’
সিংমারি থেকে দুপুরে বিমল পাতলেবাসে চলে যান। রোশন গিরি, বিনয় তামাঙ্গদের নিয়ে বিকাল অবধি টেলিফোনে খোঁজখবর নেন। দুপুর তিনটা নাগাদ ১০ নম্বর ওয়ার্ডে রঞ্জিতা থামি নামের এক ভুয়ো ভোটারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তৃণমূল ও নির্দলের এজেন্ট আপত্তি তোলে।