Darjeeling

সাড়ে তিন বছর পরে আজ খাসতালুকে গুরুং

গুরুংয়ের দার্জিলিং ফেরা নিয়ে অবশ্য অনীত, বিনয়েরা কোনও বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেননি। আবার একসঙ্গে কাজ করার কোনও প্রশ্নই নেই, তাও জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২৫
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে নেমে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে পাহাড় পালিয়ে গিয়েছিলেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। মাঝের সাড়ে তিন বছর তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে সন্ধি করেই ভিন্ রাজ্য থেকে কলকাতায় ফিরছেন গুরুং। এবার ‘ঘর ওয়াপসি’। আজ, রবিবার সকালে পাহাড় ছাড়া ১৬০ জনকে নিয়ে নিজের খাসতালুক দার্জিলিং যাচ্ছেন গুরুং। দুপুর নাগাদ চকবাজার লাগোয়া মোটরস্ট্যান্ডে সভা করবেন তিনি। সেখান থেকেই আগামী দিনে নিজের রাজনৈতিক কর্মসূচিও ঘোষণা করে দেবেন।

Advertisement

শনিবার পাহাড়ে ওঠার মুখে পঞ্চনই দলীয় দফতরে গিয়ে বহু দিন পর বৈঠক করেন গুরুং। সঙ্গে তাঁর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বিশাল ছেত্রীও ছিলেন। রবিবার শালবাড়ি থেকে পাহাড়ে ওঠা নিয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ম মেনে যাতে গাড়ি পাহাড়ে যায় এবং পার্কিং করানো হয়, তা কর্মী-সমর্থকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুংপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, ‘‘আমরা সবাই বাড়ি ফিরছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই সব সম্ভব হয়েছে। আগামীতে বিজেপিকে হারিয়ে ওঁকে আবার মুখ্যমন্ত্রী করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’’

গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তনের মধ্যে বসে নেই বিরোধী গোষ্ঠীর বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। শনিবার গোর্খা রেজিমেন্টের প্রাক্তন সেনাকর্মীদের নিয়ে কার্শিয়াঙের মন্টিভিট গ্রাউন্ডে সভা করছেন অনীত। সেই সভা থেকেই অনীত ঘোষণা করেছেন, আগামী ২৬ ডিসেম্বর সোনাদা থেকে হেঁটে তিনি দার্জিলিং রওনা হবেন। নতুন চিন্তা, নতুন দিশার সমর্থনে পদযাত্রা হবে। অনীত বলেন, ‘‘প্রাক্তন সেনাকর্মীরা এবং তাঁদের পরিবার আমাদের গর্ব। ওঁরা আমাদের সমর্থনে মিছিল, বড় সভা করলেন। পরিবর্তনের সমর্থনে ওঁরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’’ এর পরেই বলেন, ‘‘২৬ ডিসেম্বর পদযাত্রা করছি। কত মানুষ আমাদের সমর্থন করছে, তা ওই দিন পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

Advertisement

গুরুংয়ের দার্জিলিং ফেরা নিয়ে অবশ্য অনীত, বিনয়েরা কোনও বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেননি। আবার একসঙ্গে কাজ করার কোনও প্রশ্নই নেই, তাও জানিয়ে দিয়েছেন। অনীত বলেন, ‘‘পাহাড়ে যে কেউ এসে থাকতে পারেন। তবে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। হিংসা, আতঙ্কের ভয়ের পরিবেশের দার্জিলিং শেষ। নতুন দার্জিলিং গড়া হচ্ছে।’’

গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন স্তর থেরে প্রশ্ন ওঠে, আগামী দিনে কি গুরুং, বিনয়, অনীতেরা একসঙ্গে হাঁটবেন। কার্শিয়াং সভা থেকে অনীত বলে দিয়েছেন, এই রকম কোনও সম্ভাবনা নেই। ২০১৭ সাল থেকেই সবার রাস্তা আলাদা হয়ে গিয়েছে। যে যার রাস্তায় থেকে রাজনীতি করবে।

পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন, ২১ অক্টোবর গুরুং ফেরার পর থেকে শক্তি প্রদর্শন চললেও রবিবার থেকে আসল লড়াই শুরু হতে চলেছে। সমতল, ডুয়ার্সে পর আসল লড়াই পাহাড়ের ক্ষমতা ঘিরেই। আপাতত জিটিএ থাকায় প্রশাসনিক ক্ষমতা রয়েছে বিনয়, অনীতের কাছেই। তাতে সংগঠন গড়ার কাজেও সুবিধা রয়েছে। সেখানে গুরুংকে জেলায় ফিরে সক্রিয় দলীয় কর্মীদের উপর ভরসা এবং একাংশ সমর্থকের আবেগকে নিয়ে এগিয়ে সংগঠন সাজাতে হচ্ছে। সেই টক্কর কোন পর্যায়ে পৌঁছয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন