ফারাকে উদ্বেগ

মিরিক হাত ছাড়া হয়েছে। কিন্তু গোটা পাহাড়েই মোর্চার পায়ের তলার জমি সরছে। পাহাড়ের চারটি পুরসভায় মোট ভোটের বিচারে তৃণমূল সহ পাহাড়ের বিরোধীরা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একেবারে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ১৪:৪৪
Share:

চিন্তিত: ফল বেরনোর দিন দার্জিলিঙে বিমল গুরুঙ্গ।—ফাইল চিত্র

মিরিক হাত ছাড়া হয়েছে। কিন্তু গোটা পাহাড়েই মোর্চার পায়ের তলার জমি সরছে।

Advertisement

পাহাড়ের চারটি পুরসভায় মোট ভোটের বিচারে তৃণমূল সহ পাহাড়ের বিরোধীরা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একেবারে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। চার পুরসভা মিলিয়ে মোর্চা বিরোধীদের থেকে মাত্র ২৬৬৫টি ভোট বেশি পেয়েছে।

এই হিসেব জানার পরে বুধবার রাতেই জরুরি বৈঠক করেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বৃহস্পতিবারও দিনভর চুলচেরা অঙ্ক কষেছেন তাঁরা। দলীয় সূত্রের খবর, জিটিএ ভোটের কথা মাথায় রেখে কোথায়, কী ভাবে ‘পরিস্থিতির মোকাবিলা’ করা যাবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সভাসদদের রিপোর্ট তলব করেছেন মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্ব। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘জরুরি ভিত্তিতে প্রতিটি এলাকা থেকে রিপোর্ট জমা পড়বে। সেটা পেলেই বৈঠক হবে। আত্মতুষ্টির কোনও অবকাশ আর নেই।’’

Advertisement

তবে পাহাড়ের ৪ পুরসভার মধ্যে ৩টি দখলে রাখতে পারায় বুধবার প্রাথমিক ভাবে স্বস্তি পেয়েছিল মোর্চারা। কিন্তু সন্ধ্যার পরেই হিসেব হাতে আসে। দেখা যায়, চারটি পুরসভায় মোট ভোট পড়েছে ৮৩, ৩৩৯টি। তার মধ্যে মোর্চার ঝুলিতে গিয়েছে ৪৩ হাজার ২টি ভোট বা মোট ভোটের ৫২ শতাংশ। তৃণমূল-জিএনএলএফ জোট পেয়েছে ২৩ হাজার ৫২টি। জন আন্দোলন পার্টির মিলেছে ৮ হাজার ৪৯৫টি ভোট। নির্দলরা পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৯০টি ভোট। অর্থাৎ, মোর্চা বিরোধীদের মোট ভোট জুড়লে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৩৩৭। যা মোট ভোটের ৪৯ শতাংশ।

মোর্চার একাধিক নেতা একান্তে জানান, পাহাড়ের শহুরে এলাকার জনমতের প্রভাব যে জিটিএ ভোটেও পড়তে পারে, তা নিয়ে সংশয় নেই। সে জন্যই নিজেদের সাংগঠনিক ও জিটিএ-র কাজকর্ম বিষয়ক ত্রুটি যতটা সম্ভব শুধরে নিতে মরিয়া মোর্চার জনপ্রতিনিধিরা। সে জন্য একি রাস্তায় নেমে জন সংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মোর্চা নেতৃত্ব।

অঙ্কের এই হিসেব দেখে উজ্জীবিত বিরোধীরাও। তৃণমূলের পাহাড়ের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে পাহাড়ের পুর এলাকায় দলীয় কর্মীরা অফিস খুলে দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছেন।

তবে জাপ এখনও ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। কালিম্পঙে মোর্চার (১০,০৯৯) চেয়ে মাত্র ২ হাজার ৩৭৭টি ভোট কম পেয়েছে জাপ। তৃণমূল সেখানে পেয়েছে ৩ হাজার ৮৫০টি ভোট। যা জুড়লে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৫৭২টি ভোট। হরকাবাহাদুর ছেত্রী জানান, পাহাড়ের মানুষকে যে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে ভোলানো যাচ্ছে না, তা বিরোধী পক্ষ বেশি ভোট পাওয়ায় স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘এই হিসেব মাথায় রেখে আগামী দিনে পদক্ষেপ করতে হবে সকলকেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন