পাট্টা বিলিতেই নজর দিচ্ছেন বিনয়, অনীতরা

জিটিএ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন দার্জিলিং সফরের সময়ে তাঁর হাত দিয়ে দার্জিলিঙের ৩০০ এবং ১০০টি পরিবারকে পাট্টা দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। 

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

এক বছর আগে পুরভোটে মিরিকে পাট্টা বিলি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজিমাত করেছিল তৃণমূল। বিমল গুরুংহীন পাহাড়ে নিজেদের শক্তি বাড়াতে একই পথ নিয়েছেন বিনয় তামাংরাও। মুখ্যমন্ত্রীর কালিম্পং সফরের সময়েই কয়েক জনকে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। জিটিএ চাইছে পাহাড়ে তফসিলি জনজাতি ও বনবস্তির প্রায় ১১ হাজার বাসিন্দাকে পাট্টা দিতে। জিটিএ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন দার্জিলিং সফরের সময়ে তাঁর হাত দিয়ে দার্জিলিঙের ৩০০ এবং ১০০টি পরিবারকে পাট্টা দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে।

Advertisement

জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। জমির অধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও দলীয় রং দেখা হবে না।’’

বিমল গুরুং দীর্ঘদিন পাহাড় ছাড়া। কিন্তু তাঁর ছায়া এখনও দার্জিলিঙে রয়ে গিয়েছে, বলছেন পাহাড়ের মানুষজনই। ভিতরে যে কিছু ক্ষোভ রয়ে গিয়েছে, সেটা এর আগে মেনেও নিয়েছিলেন বিনয়। সেই ক্ষোভ সামলে পাহাড়ের মানুষের মধ্যে প্রভাব বাড়ানোর কাজ কী ভাবে করবেন তাঁরা, সেটাই এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গরমের মরসুমে পাহাড়ে উপচে পড়েছে পর্যটক। পুজোতেও তেমনই আশা করছেন সকলে। মোর্চা সূত্রে বলা হচ্ছে, এর ফলে সাধারণ মানুষের হাতে অর্থ আসছে। এখন যদি এর পাশাপাশি জমির পাট্টা দেওয়াও শুরু হয়, তা হলে মানুষকে আরও কাছে টানা যাবে, ধারণা বিনয়দের।

Advertisement

যদিও এই পাট্টা বিলিকে রাজনীতির কৌশল বলেই মনে করছে সিপিএম থেকে বিজেপি, সকলেই। সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য স্পষ্টতই সে কথা জানিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পাহাড়ে এখনও বিমল গুরুংয়ের জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি। মুখ্যমন্ত্রী ও বিনয় তামাংরা সেটা ভালই জানেন। তাই ভোটের আগে মানুষের মন জয় করতেই পাট্টার রাজনীতি করতে চাইছেন তাঁরা।’’ পাহাড়ের তৃণমূল নেত্রী তথা সাংসদ শান্তা ছেত্রী অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘মানুষের উন্নয়নের জন্যই রাজ্য সরকার তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। সেই উন্নয়নের সঙ্গী হয়ে কেউ যদি সরকারি দলকে সমর্থন করে, তাতে কোনও রাজনীতি থাকে না।’’ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপারও বক্তব্য, ‘‘পাহাড়ের মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছে। কালিম্পঙে সমস্যা বেশি। তাই সেখানে বেশি মানুষ পাট্টার জন্য আবেদন করেছেন।’’

জিটিএ সূত্রের খবর, বর্তমানে দার্জিলিং ও কালিম্পং দুই জেলা মিলিয়ে পাহাড়ে ১৪৮টি বনবস্তি রয়েছে। এর মধ্যে দার্জিলিংয়ে ৮৪টি এবং কালিম্পংয়ে ৬৪টি বনবস্তি রয়েছে। পাট্টার জন্য দুই জেলা থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৭৪৩টি আবেদন জমা পড়েছে জিটিএ-র কাছে। এর মধ্যে দার্জিলিং থেকে আবেদন জমা পড়েছে ২৭৪১টি। কালিম্পং থেকে আবেদন জমা পড়েছে ৮০০২টি। আবেদনকারীদের মধ্যে তফসিলি জনজাতি এবং বনবস্তির বাসিন্দারা আছেন।

মিরিক পুর এলাকায় মোট ৩৭০০টি পরিবার রয়েছে। মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান এলবি রাই জানান, তার মধ্যে ৬০০ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩১০০ পরিবারের পাট্টার কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন