এই রথই ব্যবহার করা হতে পারে প্রচারে। —ফাইল চিত্র
রথযাত্রা স্থগিত। তা বলে রথের আদলে তৈরি বিলাসবহুল বাস এখনই শিলিগুড়ি থেকে গাজিয়াবাদ ফিরছে না। বিজেপির অন্দরের খবর, আগামী ভোটের আগে একটু ভোল পাল্টে ওই ‘রথ-বাস’টিই প্রচারের কাজে ব্যবহার করার ছক কষা হয়েছে। মূলত আইন বাঁচিয়ে চলার জন্যই কী ভাবে কী করা যায়, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে এখন আলোচনা চলছে।
বিজেপির দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘যে বাসে যাত্রা হওয়া কথা ছিল, তা কদিন আগে জায়গা বদল করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত, গ্যারাজে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তা আগামী দিনে কীভাবে কাজে লাগানো হবে, সেটা শীর্ষ নেতারা ঠিক করবেন। তবে যা হবে, আইন মেনেই হবে।’’
যদিও তৃণমূল নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট অনুমতি না দেওয়ায় এখনকার ধরাচুড়ো সহ ওই ‘রথ-বাস’ কোথাও প্রচারের কাজে ব্যবহার হলেই আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলা হবে। তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘রথের মতো করে সাজানো ওই বিলাবহুল বাসটি কোনওে মতেই আর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। তাতে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হবে। তখন, আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে বিজেপি নেতাদের।’’
পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগও শিলিগুড়িতে প্রায় দেড় মাস ধরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ওই ‘রথ’ তথা যাবতীয় আধুনিক সুবিধাযুক্ত বাসের গতিবিধির উপরে নজর রাখছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বাসটি বিহারের কিসানগঞ্জে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, আগামীতে ভোটের সময়ে শীর্ষনেতাদের ছবি সম্বলিত বাসটি প্রচারে যাতায়াতের কাজে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতাদের একাংশ চিন্তাভাবনার আর্জি জানানোয় তা গ্যারাজে রাখা হয়েছে।
প্রায় দেড় মাস আগে ওই বাস শিলিগুড়ি পৌঁছেছে। এতদিন তা রাখা ছিল মাটিগাড়া থানার খাপরাইল মোড়ের কাছেই একটি হোটেলের সামনে।
ঘটনাচক্রে, শিলিগুড়িতে এলে ওই হোটেলেই থাকেন দার্জিলিংয়ের মোর্চা সমর্থিত বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। সেখানেই বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের নজরদারিতে বাসটি ছিল। বিজেপি নেতারা জানান, তিন দিন আগে বাসটি কাছেই একটি বেসরকারি গ্যারাজে নিয়ে রাখা হয়েছে।
ওই বাসের চেহারা কেমন? চালকের পাশে একটি বড় চেয়ার। তাতে একজন বসতে পারবেন। পিছনে আন্তর্জাতিক উড়ানের আসনের আদলে তৈরি দুটি বসার জায়গা। পাশে রয়েছেঅন্তত ৭ ফুট দীর্ঘ সোফা কাম বেড। ছোট ক্যাবিনেট, রেফ্রিজারেটর আছে। অত্যাধুনিক শৌচাগারও আছে।
চালক যশপাল সিংহের বাড়িও গাজিয়াবাদে। ক’দিন আগেই যশপাল বলেছিলেন, রথ নিয়ে ঘুরে তবেই তিনি যাবেন। সেই যশপালও এখন সামনে আসছেন না। তাই শেষ অবধি কী হয়, সেটাই এখন দেখার।