বৈষ্ণবনগর-কাণ্ডে ধৃত গিয়াসু শেখ। নিজস্ব চিত্র।
বৈষ্ণবনগরে বোমা-বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃত বাড়ির মালিক গিয়াসু শেখকে শুক্রবার হেফাজতে চেয়ে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করল পুলিশ। আদালত ধৃত গিয়াসুকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিন আদালতে আসার পথে গিয়াসু বলে, ‘‘আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। এর সুযোগ নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা বোমা বাঁধছিল। এখানে আমার কোনও দোষ নেই।’’
ঘটনার পর থেকেই থমথমে বৈষ্ণবনগরের ভগবানপুর পঞ্চায়েতের ঘেরা ভগবানপুর গ্রাম। পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটিতে ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। যাতে গ্রামের কেউ ওই বাড়িতে যেতে না পারে সে জন্য গ্রামে রয়েছে পুলিশ পিকেটও। কারণ ওই বাড়িতে আরও বিস্ফোরক থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি।’’
রবিবার রাতে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ঘেরা ভগবানপুরে গ্রামে বল বোমা বাঁধতে গিয়ে বিষ্ফোরণে মৃত্যু হয় তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কালাম শেখ-সহ চারজনের। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া দুই ধরনের বিষ্ফোরক নিষ্ক্রয় করতে গিয়ে বিষ্ফোরণে মৃত্যু হয় সিআইডি বম্ব স্কোয়াডের দুই কর্মী বিশুদ্ধানন্দ মিশ্র ও সুব্রত চৌধুরীর। আহত হন আরেক কর্মী মনিরুজ্জামান শেখও। তিনি এখন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষ্ণপুরের মাদারিটোলা গ্রাম থেকে বাড়ির মালিক গিয়াসুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০ বি-অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ২৮৬ বিস্ফোরক পদার্থ ব্যবহার, ৩২৬ গুরুতর আঘাত-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে গিয়াসু শেখের বিরুদ্ধে। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, পুলিশ ধৃতকে দশদিনের হেফাজতে চেয়ে আদালতে পেশ করেছিল। তবে ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সুচিত্রা দেবের তাকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গিয়াসু দিনমজুরের কাজ করলেও সম্প্রতি তার আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। পাকাবাড়ি করার কাজ চলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এ সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন গিয়াসুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে দশ কেজি আফিমের খোসা। আফিমের কারবারের সঙ্গেও সে যুক্ত থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। তাকে জেরা করে আরও বিষয় সামনে আসতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।