এখন থেকে রাজ্যের কোনও বিধায়কের দেহরক্ষী যদি থানায় মৌখিকভাবে জানিয়ে ছুটিতে যান, তাহলে তাঁকে গেলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রের খবর, বিধায়কের দেহরক্ষীরা এক-দু’ঘণ্টার জন্য ছুটি চাইলেও এসপির লিখিত সম্মতি নিতে হবে। না হলে এসপি সংশ্লিষ্ট দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারেন।
পুলিশের অন্দরের খবর, নদিয়ায় বিধায়ক খুনের ঘটনার পরে সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের সদর দফতর থেকে এই নির্দেশ জেলার পুলিশ সুপারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে তিনটি বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, কোনও বিধায়কের দেহরক্ষীকে একবেলার জন্যও ছুটি নিতে হলে এসপির লিখিত সম্মতি নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিধায়ক যেখানেই যান, প্রকাশ্য কিংবা ঘরোয়া অনুষ্ঠান, সেখানে দেহরক্ষীকে পাশে বা ২ মিটারের মধ্যে থাকতে হবে। তৃতীয়ত, বিধায়ক এক-দু’ঘণ্টার জন্য ছুটি দিলেও এসপির সম্মতি না থাকলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
এমনিতেই জেলায় কিংবা পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় কোনও পুলিশকর্মীকে ছুটি নিতে হলে পুলিশ সুপার কিংবা পুলিশ কমিশনারের অনুমতি নিতে হয়। তা হলে নতুন করে এমন বার্তা পাঠানোর প্রয়োজন পড়ল কেন? পুলিশের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনের পরে দেখা গিয়েছে তাঁর দেহরক্ষী যে অনুপস্থিত রয়েছেন তা পুলিশ সুপারের অফিস জানত না। পুলিশের একাংশের অনুমান, থানায় মৌখিকভাবে জানিয়ে একবেলা বা একদিনের জন্য বিধায়কের দেহরক্ষীর ছুটি নেওয়া পুলিশে নতুন কিছু নয়। সে ক্ষেত্রে আগে বিধায়কের সম্মতিতেই তা অনেকে নিয়েছেন।
কিন্তু, সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটেই বিধায়ককে জানিয়ে আর ‘থানাকে ছুঁয়ে’ ছুটিতে যাওয়া রুখতে কড়াকড়ি করছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই সেই বার্তা পৌঁছেছে। তা বিধায়কদের দেহরক্ষীদেরও জানিয়ে দিয়েছে জেলা পুলিশ। যেমন, আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, ‘‘কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়ে ছুটি নেওয়া বরদাস্ত হবে না। বিধায়কদের দেহরক্ষীদের যে কোনও ছুটি নিতে এসপির লিখিত সম্মতি নিতে হবে। না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
নিরাপত্তার খাতিরে অনেক বিধায়ককে দু’জন করে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে। তাঁরাও একে অন্যের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আর ছুটি নিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রেও পুলিশ সুপার কিংবা পুলিশ কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী-সহ অন্তত ২০ জনের দু’জন করে দেহরক্ষী রয়েছেন।