উদ্ধার: জাটিয়াকালির চা বাগান এলাকা খুঁড়ে মিলেছে। নিজস্ব চিত্র।
চা বাগানের জমির পাশের মাটি খুঁড়ে হাড় ও খুলির অংশ উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ির এনজেপি থানার জটিয়াকালিতে।
শুক্রবার বাগানের মালিকপক্ষ পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে বলে হয়, চা গাছের ঝোপের পিছনে কাউকে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা খবর পেয়েছেন। অভিযোগ পেয়েই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল থেকে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। কয়েক ফুট গর্ত খোঁড়ার পর দেহাংশ, হাড়গুলি বার হয়ে আসে।
মালিকপক্ষের অভিযোগ, বাগানের কর্মী সুরেশ বর্মন এবং তার পরিবার ঘটনায় যুক্ত। তাকে পুলিশ জেরা শুরু করেছে। সুরেশবাবু দাবি করেন, ১৫ বছর আগে ছোট ছেলে, নবারুণ মন্ডল জলাতঙ্কে মারা যায়। তাকেই সেখানে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। এখন তাকে জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য পুরনো ঘটনা সামনে আনা হল। অভিযুক্তের দাবি কতটা সত্যি তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (ইস্ট) গৌরব লাল। তিনি বলেন, ‘‘ময়নাতদন্ত, ডিএনএ টেস্টের জন্য দেহাংশগুলি পাঠানো হয়েছে। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক দশক আগে জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাবাড়ি মৌজায় সাড়ে ছয় একর জমি কেনেন শিলিগুড়ির গৌরাঙ্গ দাস এবং পুতুল দাস। তাঁরা সেখানে চা বাগান গড়ে তোলেন। বাগান দেখভালের জন্য রাখা হয়, সুরেশ বর্মনকে। গৌরাঙ্গবাবু এবং পুতুলদেবীর মৃত্যু পর জমির দখল নিতে যান তাঁদের পরিবারের লোকজন। সুরেশবাবুর সঙ্গে সেই সময় থেকেই গোলমাল শুরু হয়। দাস পরিবারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘একে তো অভিযুক্ত ব্যাক্তি জমিতে মালিকপক্ষকে ঢুকতে দিচ্ছে না। আবার সেখানে কবর জাতীয় কিছু রয়েছে বলে খবর পাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাই।’’
মাটি খোঁড়ার সময় সেখানে ছিলেন সুরেশবাবু। তিনি জানান, ২০০২ সালে তাঁর ছোট ছেলেকে কুকুর কামড়ায়। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি হাসপাতালে দেখাই। পরে বাড়িতে সে মারা যায়। মনের শান্তির জন্য বাড়ির পাশেই ওকে পুঁতে দিয়েছিলাম। ভুল একটাই করেছিলাম, পুলিশকে কিছু জানাইনি। মৃত গৌরাঙ্গবাবুর কাছ থেকে এক সময় ১ লক্ষ ২৭ হাজার টাকায় এক একর জমি কিনেছিলাম। আমার জমির দখল নিতে এসব পুরানো জিনিস খুঁড়ে বার করল।’’