গুলশান তো বটেই, বাংলাদেশে একের পর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে বলে উদ্বিগ্ন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডস-এর (বিজিবি) শীর্ষ অফিসাররা। তাই অনুপ্রবেশকারী যাতায়াত, বিস্ফোরক, অস্ত্র পাচার রুখতে যৌথ নজরদারিতে জোর দিচ্ছেন দুই বাহিনীর অফিসারেরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির কদমতলায় বিএসএফের হেড কোয়ার্টারে দুই বাহিনীর চার দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। বিএসএফের উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়রের আইজি’রা-১৯ জন অফিসার বৈঠকে অংশ নেন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় আরেক দফায় বৈঠকের পর যৌথ সাক্ষর হবে। বিজিবি-র তরফে এডিজি শাহরার আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশের ২০ জনের দলটির নেতৃত্বে আছেন।
বিজিবির এডিজি বলেন, ‘স্পর্শকাতর সীমান্তকে ব্যবহার করে অনুপ্রবেশ, বিস্ফোরক-অস্ত্র পাচার হতে দেওয়া যাবে না। আমরা একযোগে সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’’ বৈঠকে বিএসএফের নেতৃত্বে থাকা উত্তরবঙ্গের আইজি কমলনয়ন চৌবে বলেন, ‘‘সীমান্ত জুড়ে নজরদারি বহুগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে চলবে দ্রুত দুই বাহিনীর মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান।’’
বিএসএফ সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৪০৯৬ কিলোমিটারের কিছু বেশি সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে এ রাজ্য ও অসম মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ২৫০০ হাজার কিলোমিটার। মোট সীমান্তের মধ্যে ১ হাজার কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই অংশে যার পরিমাণ প্রায় ২৩ শতাংশ। জমি সমস্যা এবং নদীর জন্য বিভিন্ন এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া এখনও দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর সুযোগেই গরু পাচার, চোরাচালান, জাল টাকা, মাদকের কারবার চলছে। গত নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন অবধি ২৪৭৩ জন বাংলাদেশি বাসিন্দাকে এ পারে ধরা হয়। ৯১৮ জন ভুল করে এপাশে আসায় তাদের পরে ছাড়া হয়। বাকিদের ধরা হয়েছে।
দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অফিসারেরাই জানিয়েছেন, বিভিন্ন অস্থিরতার সময় বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা সীমান্তে সক্রিয় হয়ে উঠে। বাংলাদেশ থেকে যেমন অসম, পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা হয়। কল্যাণপুরে জঙ্গি ঘাঁটি গুড়িয়েছে বাংলাদেশ। ওই দেশ থেকে চোরাপথে এ দেশে ঘাঁটি গাড়ার সম্ভাবনাও থাকে। এদিন বিভিন্ন বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের তথ্য বিজিবিকে দিয়েছে বিএসএফ। আজ, বুধবার বিজিবি-র দল সীমান্ত পরিদর্শনের পর দার্জিলিং যাবে।