আদিবাসী ভিড়ে নজর

মালদহে অমিত শাহের সভায় স্থানীয় আদিবাসীদের ভিড় নজরে পড়েছিল। একই চেষ্টা দেখা গেল বুধবার মালদহে তৃণমূলের পাল্টা সভায়। 

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৩
Share:

বক্তা: মালদহের নিত্যানন্দপুরের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

মালদহে অমিত শাহের সভায় স্থানীয় আদিবাসীদের ভিড় নজরে পড়েছিল। একই চেষ্টা দেখা গেল বুধবার মালদহে তৃণমূলের পাল্টা সভায়।

সাদার উপরে লাল রঙের শাড়ি, মাথায় রঙিন কলসি, ধামসা, মাদলের তালে কোমর দুলিয়ে তৃণমূলের পাল্টা সভায় হাজির হবিবপুর ও পুরাতন মালদহ থেকে দু’দল আদিবাসী সমর্থক। পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুরে বিজেপির কায়দাতেই এ দিন আদিবাসীদের কিছু দল হাজির হয় তৃণমূলের সভায়। তা কি অমিত শাহের সভার থেকে বেশি না কম, এই প্রশ্ন নিয়েও এ দিন নাড়াচাড়া চলল রাজনৈতিক মহলে। পুলিশের একটি অংশ দাবি করেছে, তুল্যমূল্য বিচারে এ দিন কিছুটা কমই ছিল আদিবাসী ভিড়। তবে তাদেরই আর একটি অংশ বলছে, আদিবাসীরা সভায় যোগ দিয়ে নাচগান করেছেন। তাই তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।

Advertisement

উত্তর মালদহের সাতটি বিধানসভার মধ্যে হবিবপুর, গাজল ও পুরাতন মালদহ কেন্দ্র আদিবাসী অধ্যুষিত। এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রেই এ বারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলকে টেক্কা দিয়েছে বিজেপি। ওই তিন কেন্দ্র থেকে জেলা পরিষদের ছ’টি আসন এবং দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি ও প্রায় ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত একক ভাবে দখল করে বিজেপি।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলিতে বিজেপি ভাল ফল করায় ঘুম ছুটেছিল মৌসমের। এর পরেই তিনি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বরকতের জন্মদিন উপলক্ষে আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলিতে স্বাস্থ্য শিবির, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের সুবিধা দানের কর্মসূচি নেন। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, কংগ্রেসে আদিবাসী মুখ নেই। ফলে ওই এলাকাগুলিতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় এ দিন দেখার ছিল, তৃণমূলের সভায় কেমন ভিড় হয় আদিবাসী মহল্লা থেকে। তৃণমূলেরই কেউ কেউ বলছেন, এ দিন আদিবাসীদের লোক কম আসায় মৌসমের মাথাব্যথা বাড়ল। এই ভোটব্যাঙ্কের দিকেই কিন্তু বিজেপি তাকিয়ে রয়েছে।

অথচ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। তপনের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা এ দিন আদিবাসীদের ভাষাতেই বক্তব্য রাখেন। শুভেন্দুও দাবি করেন, আদিবাসী মহল্লা থেকে যথেষ্ট লোকই এসেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের সভায় স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে আদিবাসীরা যোগ দিয়েছিলেন। এ দিন শুনেছি তৃণমূল জোর করে আদিবাসীদের সভায় নিয়ে এসেছেন।’’ এই দাবির বিরোধিতা করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘বিজেপিকেই জোর করতে হয়।’’

সভায় হাজির সোনামণি কিস্কু, সানজি সোরেনরাও এক বাক্যে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাই করেছেন। ধামসা মাদল নিয়ে তাঁদের দলবল দীর্ঘক্ষণ নাচগান করেছে। তারই ফাঁকে সোনামণিরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের জন্য অনেক করছেন। তাই সভায় এসেছি।’’ মৌসম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী এলাকায় স্কুল, রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আদিবাসীদের পুজোর থান তৈরি করে দিচ্ছেন। ফলে আদিবাসীরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement