HS Exam

HS Examination 2022: দুর্যোগের ক্ষত নিয়েই পরীক্ষা দেবে ভাইবোন

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতে চোট, ব্যথা থাকায় ‘রাইটার’ নিয়ে পরীক্ষায় বসার আর্জি জানায় সাহিন। ঝড়ে বোন সাহিনার বইপত্র নষ্ট হয়।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৩
Share:

ঝড়ের দাপটে আহত শাহিন হক। ছবি: হিমাংশু রঞ্জন দেব

ঝড় কেড়ে নিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। হাসপাতালে ভর্তি মা। ভাইয়ের মাথায় ব্যান্ডেজ। বোনের চোখেমুখেও ঝড়ের রাতের আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তবু হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার ‘ছুটি’ পেতেই দুই ভাই-বোন পরীক্ষা দেওয়া ‘নিশ্চিত’ করতে ছুটল স্কুলে। কোচবিহারের সুটকাবাড়ি এক্রামিয়া হাইমাদ্রাসার পড়ুয়ারা তারা। ভাই সাহিন হক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, তার বোন সাহিনা সুলতানা একাদশের। আজ বুধবার ওই দু’জনেরই পরীক্ষা। ঠিক হয়েছে, এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পরীক্ষা দেবে ভাইবোন।

Advertisement

ওই মাদ্রাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতে চোট, ব্যথা থাকায় ‘রাইটার’ নিয়ে পরীক্ষায় বসার আর্জি জানায় সাহিন। ঝড়ে বোন সাহিনার বইপত্র নষ্ট হয়। ফলে বুধবারের পরীক্ষায় বসতে পারবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে দু’জনেই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইসরি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মানস ভট্টাচার্য মঙ্গলবার ওই দু’জনের সঙ্গে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখা করেন। দুই ভাইবোনের সঙ্গে ওই মাদ্রাসাতেও যান।

মানস বলেন, “সাহিনার বইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংসদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও ওই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রাইটারের আর্জির বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ভাবে কথা বলেছি। সমস্যা হবে না। বোনেরও যাতে একাদশের পরীক্ষায় অসুবিধা না হয় তা দেখা হচ্ছে।” সুটকাবাড়ি এক্রামিয়া হাইমাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাবিব হোসেন বলেন, “সাহিনের জন্য রাইটার বাছাই করা হয়েছে। সাহিনারও একাদশের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হবে না, আশ্বস্ত করেছি।”

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহিন, সাহিনার বাবা ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। দরিদ্র পরিবার। মা সাবিনা খাতুনের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থাকে দুই ভাইবোন। রবিবার রাতের বিধ্বংসী ঝড়ে জখম হয় বাড়িতে থাকা তিন সদস্যই। ওই রাতেই তাদের কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান হয়। সাহিনের কথায়, “ সবাই ঘরেই ছিলাম। মূহূর্তের মধ্যে বিধ্বংসী ঝড় শুরু হয়। ঘরে গাছ উপড়ে পড়ে। আমাদের জীবনটাও যেন তছনছ করে দিয়েছে। হাতে যন্ত্রণা থাকায় নিজে লিখতে পারবনা, রাইটার দরকার। তাই মা’কে মাদ্রাসায় এসেই স্যারদের জানিয়েছি।” সাহিনা সুলতানা বলছেন, “আত্মীয়ের বাড়িতে আপাতত থাকব ঠিক হয়েছে। আমিও পরীক্ষা দিতে চাইছি।” সাহিন-সাহিনার মত দুর্যোগের ‘ক্ষত’সারাতে লড়ছে এলাকার অনেক পড়ুয়াই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন