জঞ্জাল: সাফাই হয় না হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র
আছে বার্ন ইউনিট। কিন্তু নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স। একনজরে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এমনই দশা। বড় কোনও বিস্ফোরণ বা বিপর্যয় হলে তাই কী ভাবে আগুনে ঝলসে যাওয়া লোকজনের চিকিৎসা করা হবে, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর নেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে।
এত দিন জলপাইগুড়িতে সরকারি হাসপাতাল বলতে সবেধন নীলমণি ছিল জেলা হাসপাতাল। সম্প্রতি তৈরি হয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি। কিন্তু তাতে দু’টি পৃথক হাসপাতাল হওয়ার বদলে দেখা গিয়েছে জেলা হাসপাতাল থেকেই বিভাগ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটিতে। জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিট নেই। সুপার স্পেশ্যালিটিতে তৈরি হয়েছে এমন ইউনিট। কিন্তু অভিযোগ, তা নামেই বার্ন ইউনিট। তাতে আগুনে পোড়াদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ঠিকঠাক নয়। সার্বিক পরিকাঠামোর বেহাল দশা। কী রকম?
সুপার স্পেশ্যালিটিতে পুরুষ ও মহিলা বিভাগ মিলিয়ে বার্ন ইউনিটে শয্যা সংখ্যা প্রায় ৫০। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক বা নার্সের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ অনেক রোগীরই। তাঁদের আরও দাবি, পরিকাঠামো ঠিকমতো না থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কাও যথেষ্ট। সে জন্য আগুনে পোড়া রোগীর বেশি বাড়াবাড়ি হলে তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করে দেওয়া হয় বলে দাবি সাধারণ মানুষের।
পরিকাঠামোর যে অভাব রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন এখানকার চিকিৎসকেরাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শল্য চিকিৎসক বলেন, ‘‘এখানে কোনও কিছুই ঠিক অবস্থায় নেই। ফলে বড় কোনও বিপর্যয় হলে কী ভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে, তা কেউই জানেন না।’’ স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক প্রশান্ত সরকারের দাবি, ‘‘বার্ন ওয়ার্ডে বাতানুকূল ব্যবস্থা তো নেই-ই। তা ছাড়া যখন কোনও রোগীকে এখানে রাখা হয়, তাঁকে সাধারণ কাপড়ে ঘিরে রাখা হয়। অগ্নিদগ্ধ হলে চিকিৎসার কি এই নিয়ম?’’ অভিযোগ রয়েছে অ্যানাস্থেটিস্টের সংখ্যা নিয়েও।
গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের বারবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এরও জবাব পাওয়া যায়নি। একই ভাবে ফোন ধরেননি জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তা বা সিএমওএইচ-ও। কলকাতার মতো বিপর্যয় যদি জলপাইগুড়িতে ঘটে, তা হলে সেটা সামলাতে কী করা হবে, সেই প্রশ্নের সঠিক জবাব তাই এ দিন মেলেনি।