বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বাঁচল বাস

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দূর থেকে বাসটিতে রেল লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ট্রেনের চালকই ব্রেক কষে ট্রেনটিকে দাঁড় করান৷ যদিও রেলের দাবি, বাসটি লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে পড়ায় তারাই ট্রেনটিকে সিগন্যাল দেননি৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৪০
Share:

লেভেল ক্রসিং-এর দুই দিকে গেট পড়ে রয়েছে৷ মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি যাত্রীবাহী বাস৷ আর সেই সময় ওই রেল লাইন দিয়ে ধেয়ে আসছে একটি ট্রেন৷ এই দৃশ্য দেখে ভয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আশপাশের বাসিন্দাদের। তবে শেষমেশ অঘটন ঘটেনি। খানিক আগেই থেমে যায় ট্রেনটি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সবাই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাগুড়ি রোড স্টেশনের এই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাসের প্রায় ৩০-৩৫ জন যাত্রী৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দূর থেকে বাসটিতে রেল লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ট্রেনের চালকই ব্রেক কষে ট্রেনটিকে দাঁড় করান৷ যদিও রেলের দাবি, বাসটি লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে পড়ায় তারাই ট্রেনটিকে সিগন্যাল দেননি৷ তাই ট্রেনটি সেখান থেকে খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে পড়ে৷ তবে কোনও কারণে ট্রেনটি না দাঁড়ালে যে এ দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো তা মানছেন সকলেই৷ গোটা ঘটনার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে শুরু করে বাসযাত্রী বা রেলকর্মীরা বাস চালকের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন৷

জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল নয়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে৷ ময়নাগুড়ি লেভেল ক্রসিং দিয়ে ওই সময় চ্যাংরাবান্ধ্যা থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন যায়৷ এ দিনও সেই সময় ওই ট্রেনটি যাচ্ছিল৷ ওই একই সময় রাস্তা দিয়ে মালবাজার থেকে জলপাইগুড়িগামী একটি বাস আসছিল৷ বাসিন্দাদের অভিযোগ, গেট পড়ে যাচ্ছে দেখেও চালক দ্রুত গতিতে সেখান থেকে বাস নিয়ে বেরিয়ে যেতে চান৷ কিন্তু একটি গেট পার হতে পারলেও, বাসটিকে অপর গেট পার করতে পারেননি তিনি৷ তার আগেই সেটি পড়ে যায়৷ মাঝে রেল লাইনের ওপর আটকে যায় বাসটি৷

Advertisement

সেই সময়ই রেল লাইন দিয়ে প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে আসতে দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ যাত্রীরা বাস থেকে নামতে হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন৷ স্থানীয় বাসিন্দারাও ছুটে এসে অনেককে বাস থেকে নামান৷ ততক্ষণে খানিকটা দূরে ট্রেন দাঁড়িয়ে গিয়েছে৷ সবাই হাঁফ ছাড়েন।

এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ওই লেভেল ক্রসিংয়ে থাকা গেটম্যান মৃণাল সাখারী বলেন, ‘‘গেট পড়ার আগে দু’দিকে থাকা সিভিক ভলান্টিয়াররাও চালককে দাড়িয়ে যেতে বলে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু তিনি তাদের কথাও শোনেননি৷ গেট পড়ে যাচ্ছে দেখেও বাস নিয়ে এগিয়ে যান৷’’ মৃণালবাবু দাবি করেন, ‘‘বাসটি আটকে যাওয়ায় আমি সিগন্যাল বন্ধ করে দিই৷ তাই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়৷’’

ঘটনায় ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা কর্তৃপক্ষও৷ সংস্থার এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ গোটা ঘটনা সংস্থার সর্বোচ্চ কর্তাদের জানানো হয়েছে৷ তদন্তের পর তাঁরাই বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন