মোটরবাইক নিয়ে তাড়া করে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে পালল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে আলিপুরদুয়ারের পশ্চিম কাঁঠাবাড়ি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে গুলিবিদ্ধ ওই যুবকের নাম দীপক কুমার বর্মণ। বাড়ি পশ্চিম কাঁঠালবাড়ি গ্রামে। ওই যুবক সুদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন ব্যাক্তি কে সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দেন তিনি। রাতেই স্থানীয় বাসিন্দা ও বাড়ির লোকেরা তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে কোচবিহারে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেছেন। কী কারণে কারা তাঁর উপর এই আক্রমণ চালিয়েছে সেটা এখনও পুলিশ জানতে পারেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা সুদের ব্যবসায় টাকা লেনদেন নিয়ে কোন বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে একটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, নাইন এমএম পিস্তল থেকে দীপকবাবুকে গুলি চালানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। ওই যুবক কে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই সেটা স্পষ্ট হবে।’’
দীপকবাবুর স্ত্রী পম্পি বর্মন জানান, “আমার স্বামীর কোনও শত্রু আছে বলে আমার জানা নেই। ওই দুই দুষ্কৃতীকে আমার স্বামী চিনতে পারেনি। কী ভাবে এমনটা হল কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ পলাশবাড়ি থেকে মোটরবাইক চালিয়ে পশ্চিম কাঁঠালবাড়ি গ্রামে ফেরার পথে দুই অপরিচিত যুবক দু’টি বাইক এসে তার পথ আগলে ধরে। পিস্তল বের করে এক যুবক গুলি চালায় বলে অভিযোগ। টাকা লুঠের চেষ্টায় বাধা দেওয়াতেই আলিপুরদুয়ারের পলাশবাড়ির ব্যবসায়ী দীপক বর্মন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দাবি করলেন তাঁর আত্মীয়রা। শনিবার রাতে বাইকে বাড়ি ফেরার সময় পলাশবাড়ি এলাকায় বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে দীপকবাবু গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে পলাশবাড়ি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। পরে ওই রাতেই নিউ কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে দীপকবাবুকে ভর্তি করান পরিবারের লোকেরা। নার্সিংহোম সূত্রের খবর, দীপকবাবুর পেটে গুলি লেগেছে। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা।
দীপকবাবুর আত্মীয় প্রশান্ত রায় অভিযোগ করেন বলেন, “মূলত ট্রাক্টর ও ধান, ভুট্টা ঝারাইয়ের মেশিন ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করতেন দীপক। হাটের দিন বাজারে ওই ভাড়ার সংগ্রহ করতেন। শনিবার সেই টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দু’টি মোটরবাইকে ৫ জন ওঁর পিছু নেয়। তাঁদের মধ্যে একটি মোটরবাইকে দু’জন খানিক ক্ষণের মধ্যে সামনে গিয়ে রাস্তা আটকে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র দেখানো হয়। সে সময় দীপক ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি ধরে ফেলতেই দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। লোকজন ছুটে আসায় তাঁরা পালিয়ে যায়।” দীপকবাবুর মামা মহেশ বর্মন বলেন, “মনে হচ্ছে, টাকা লুঠই আসল উদ্দেশ্য ছিল।” রবিবার সকালে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ ওই নার্সিংহোমে তদন্তে যায়। পরিবার সূত্রের খবর, টাকা অবশ্য লুঠ করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। দীপকবাবুর কাছে প্রায় ১২ হাজার নগদ টাকা ছিল।