সেজে উঠেছে মদনমোহন মন্দির। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
রাসমেলা শুরুর তিন দিনের মাথায় কোচবিহার লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ১৯ নভেম্বর তমলুক লোকসভা আসনের সঙ্গে কোচবিহার কেন্দ্রের জন্য ভোট নেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ১৪ নভেম্বর রাসমেলা শুরু হবে কোচবিহারে। তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের প্রচার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। এখনও অবশ্য কোনও দলের তরফেই তাঁদের প্রার্থী ঘোষণা না করায় জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কে হতে পারেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। রাজ্যের বিরোধী দল এমনকি শাসক দলও তাঁদের প্রার্থীর নাম কেন ঘোষণা করতে পারলেন না তা নিয়েও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে। সব দলই অবশ্য জানিয়েছে, তাদের রাজ্য নেতৃত্ব প্রার্থীর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। দ্রুত তা জানতে পারবেন সকলেই।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁরা শাখা ও আঞ্চলিক স্তরে প্রচার অভিযান শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “প্রার্থীর নাম রাজ্য নেতৃত্ব ঘোষণা করবেন। আমরা ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছি। উৎসবের মরসুমের জন্য ব্যাপক আকারে তা করা হয়নি। আগামীতে কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্রের খবর, শাসক দলের প্রার্থী হতে ইতিমধ্যেই পনেরোটির বেশি জীবনপঞ্জি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছে। কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সে কারণেই রাজ্য নেতৃত্ব সব বুঝেশুনেই তাঁদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন।
অন্যদিকে বাম তথা ফরওয়ার্ড ব্লকও তাঁদের প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কারও বিশেষ আগ্রহ নেই বলে বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে। ফ্রন্টের নেতা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারী জানান, আগামী ১৯ অক্টোবর কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে আলোচনায় বসবে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। ২৩ অক্টোবর জেলা বামফ্রন্টগত ভাবেও আলোচনা হবে। তিনি বলেন, “বৈঠকের পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
কোচবিহার জেলা বিজেপির তরফে অবশ্য ভোটের সময় নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। তাঁদের যুক্তি, ওই সময়ে নির্বাচন হলে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে তারা আজ, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে দেখা করবেন। কোচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “আমরা চাই রাসমেলার আগে অথবা পরে ভোট হোক। এ ছাড়া জোটের ব্যাপারে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। প্রার্থী ও জোটের ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।” বিজেপি সূত্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের অনন্ত মহারাজের সঙ্গে বিজেপির সখ্য তৈরি হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই বিজেপি প্রার্থী ঠিক করতে পারে। কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি আছে। হাইকমান্ডের নির্দেশ মতো আমরা কাজ করব।”