ভালুকার মন্দির। — নিজস্ব চিত্র
একটি পুজো শুরু হয়েছিল ১১৭৬ সালে। দুর্ভিক্ষের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রজাদের নিয়ে শক্তির আরাধনা শুরু করেছিলেন মালদহের রতুয়ার জমিদার। ৩০০ বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুরের বৈরাটে স্বপ্নাদেশ পেয়ে অন্য একটি পুজো শুরু করেছিলেন রাজ এস্টেটের এক কর্মচারী। আবার চাঁচলের রণঘাট থেকে বিহারে দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা থেকে আর নিয়ে যাওয়া যায়নি। ফলে সেখানেই দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু হয়। প্রথম দেবী এলাকার রক্ষাকর্তা। অন্য দুই দেবী আজও কল্যাণেশ্বরী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। আলোর রোশনাই নেই। নেই জাঁকজমক। তবু শতাধিক বছরের পুরনো ওই তিন পুজোকে ঘিরেই মেতে ওঠেন এলাকার মানুষ।
৭৬-এর মন্বন্তরে তখন দিশেহারা প্রজারা, তখন তাঁদের দুর্দশার হাত থেকে বাঁচাতে রতুয়ার রুকুন্দিপুরে ওই পুজো শুরু করেছিলেন জমিদার বেণীমাধব ঘোষ। পুজো হয় স্থায়ী মন্দিরে। দেবী এখানে মৃন্ময়ী। রয়েছে বলি প্রথাও। পারিবারিক হলেও ওই পুজোকে ঘিরেই মেতে ওঠেন বাসিন্দারা।
বৈরাটের পুজো তিন শতক আগে শুরু করেছিলেন দুর্গাকিঙ্কর সিংহের পরিবার। তাঁদের আদি নিবাস ছিল মেদিনীপুরের কাঁথিতে। চাঁচলের রাজা ওই এলাকায় এস্টেট দেখাশোনার জন্য তাঁদের নিয়ে এসেছিলেন। কথিত রয়েছে, পরিবারের এক মহিলা এক বিরাট বটগাছের তলায় শিবলিঙ্গ দেখতে পেয়ে সেখানে নিয়মিত পুজো শুরু করেন। পরে স্বপ্নাদেশে শুরু হয় কালী পুজো। সিংহ পরিবারের সঙ্গে দেবীর সম্পর্ক ছিল মেয়ের। এখন সর্বজনীন হলেও রীতি মেনে বিসর্জনের আগে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় উদ্যোক্তা সিংহ পরিবারের উঠোনে। সেখানে বিদায়ের আগে দুধ ও খই খাওয়ানো হয় দেবীকে।
আর ভালুকা সর্বজনীন কালীপুজো শুরু হয়েছিল ১১৮ বছর আগে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে সেখানে স্থায়ী মন্দির হয়েছে। পুজো উপলক্ষে বৈরাট ও ভালুকায় দু’দিন ধরে চলে জমাটি মেলা।