শোক: ভেঙে পড়েছেন মৃত শিশুর পরিজন। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে ছ’বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়গঞ্জ মেডিক্যালের ঘটনা। পরিবারের লোকেরা অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তির দাবিতে শিশপ বিভাগের ওয়ার্ডে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা নার্সদের ঘেরাও করেও কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মৃত ওই শিশুটির নাম জ্যোতি বর্মণ। বাড়ি কালিয়াগঞ্জ থানার রঘুনাথপুর এলাকায়। এদিন বিকেলে ওই শিশুটির পরিবারের তরফে হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত ভাবে ওই ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ জানানো হয়েছে।
যদিও হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডলের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির কোনও প্রমাণ মেলেনি। শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসাও শুরু করেছিলেন। তবুও শিশুটির পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জ্যোতি রঘুনাথপুর এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। জ্যোতির বাবা পরেশ বর্মণ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের ভবন মেরামতির কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী আরতি গৃহবধূ। তাঁদের দুই মেয়ে ও একছেলের মধ্যে জ্যোতি মেজ ছিল। পরেশের দাবি, প্রতিদিনের মতো এদিনও সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্নান সেরে স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হয় জ্যোতি। সেইসময় আচমকা জ্যোতির হাত ও পা কাঁপতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার গোটা শরীর কাঁপতে শুরু করে। এরপর অচেতন হয়ে সে বাড়ির উঠোনে পড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এরপর পরিবারের লোকেরা তাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশুবিভাগে ভর্তি করেন। পরেশের কথায়, মেয়েকে বেলা ১১টা ৪৪ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করি। তখনও কিছুক্ষণ অন্তর মেয়ের শরীর কেঁপে উঠছিল। সেইসময় শিশুবিভাগে কোনও চিকিত্সক ছিলেন না। জ্যোতির শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে অবনতি হতে দেখে আমরা নার্সদের বার বার কোনও চিকিত্সকে কলবুক দিয়ে ডাকার অনুরোধ করি। পাশাপাশি, নার্সদেরও জ্যোতিকে দেখার অনুরোধ করি। কিন্তু নার্সরা আমাদের কথার কোনও গুরুত্ব দেননি। জ্যোতিকে দেখার জন্য নার্সরা কোনও চিকিৎসককে ডাকেননি।