৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে সেই জ্বলন্ত গাড়ি। ছবি: রাজকুমার মোদক।
বেশ কিছু দিন ধরে গরু চুরি হচ্ছিল এলাকায়। তাই নিয়ে বাসিন্দাদের মনে ক্ষোভ জমছিল। বুধবার সেই ক্ষোভই তীব্র আকার নিল ধূপগুড়িতে।
এলাকাবাসীর দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরে গরু চুরি হচ্ছিল ওই এলাকায়। কে বা কারা এই চুরির সঙ্গে যুক্ত, তার হদিশ মিলছিল না। পুলিশে জানিয়েও লাভ হয়নি। এরই মধ্যে এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ একটি ছোট ট্রাক এসে থামে ধূপগুড়ির একটি পেট্রোল পাম্পে। তেল ভরার পর রাস্তার পাশে গাড়িটিকে দাঁড় করান চালক। পেট্রোল পাম্পের কর্মচারীদের দাবি, তাঁরা গাড়ির মধ্যে বেশ কয়েকটি গরুর মাঝে দু’টি মৃত গরুকে পড়ে থাকতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় তখন চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন। সেই সময় গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান চালক আর তার সহকারী। ইতিমধ্যে এলাকার বেশ কিছু মানুষজন ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন।
পেট্রোল পাম্পের মালিক তখন খবর দেন ধূপগুড়ি থানায়। কিন্তু, ঘণ্টা দেড়েক পরেও পুলিশ না আসায় ক্ষুব্ধ জনতা গাড়ি থেকে গরুগুলোকে নামান। তার পর, গাড়িটাকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যান ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। রাস্তা অবরোধ করে পুলিশের জন্য ফের ‘অপেক্ষা’ করতে থাকেন তাঁরা। এর পর ৯টা নাগাদ রাস্তার উপর গাড়িটাকে উল্টে ভাঙচুর শুরু হয়। তার পর, গাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তুলতে গিয়ে তাঁরা বাধার মুখে পড়েন। উত্তেজিত জনতা তাঁদের আগুন লাগানো গাড়িটির কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না। পুলিশ তখন লাঠি চালায়। এর পর দমকলে খবর দেয় তারা। দমকল এসে আগুন নেভায়।
এর পর, সড়ক অবরোধ ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে পুলিশের প্রায় ৫০ জনের একটি দল ধূপগুড়ি বাজারে পৌঁছয়। সেখানেও জনতার রোষের মুখে পড়ে পুলিশ বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই বাজারে পৌঁছে পুলিশ অকারণে দোকানদারদের মারধর শুরু করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে তাঁরা ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। ইটের ঘায়ে এক পুলিশকর্মীর মাথা ফেটে যায়। অল্প-বিস্তর আহত হন অন্যান্যরাও। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তখন শূন্যে কয়েক দফা গুলি চালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, গরুগুলোকে আপাতত ধূপগুড়ি থানায় রাখা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, গরুগুলোকে বিহার থেকে দিনহাটার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। চালক ও তার সহকারীর খোঁজ চলছে। এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া।