থ্রি ইডিয়টসে রাঞ্চো পেরেছিল৷ পদ্মশ্রী করিমুল হকও নিয়মিত সেই কাজ করে চলেছেন৷ কিন্তু সেই একই পথে গিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না করিমুলের জেলারই বাসিন্দা রাকেশ দাস৷
রবিবার সকালে আচমকা তিনি দেখেন তাঁর ছোট্টো বোনটা গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। কোনওমতে সেখান থেকে বোনকে নামানোর পরও দেখেন, তার শরীর গরম রয়েছে। তখন প্রথমেই ছুটে গিয়েছিলেন পাড়াতেই থাকা একটি অ্যাম্বুল্যান্সের আশায়৷ কিন্তু চালক ছিলেন না। আর দেরি করেননি রাকেশ৷ বন্ধুর একটি মোটর সাইকেলে বসে পড়েন তিনি৷ মাঝে বোনকে বসিয়ে পিছনে বসিয়েছিলেন আর এক বন্ধুকে৷ এ ভাবে এক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তারা পৌঁছন স্থানীয় বাজারে৷ সেখান থেকে একটি মারুতি ভ্যান নিয়ে সোজা চলে যান জলপাইগুড়ি হাসপাতালে৷ কিন্তু সেখানেই চিকিৎসকরা রাকেশকে জানিয়ে দেন তাঁর বোন মারা গিয়েছে৷
জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের টাকিমারির বাসিন্দা ওই কিশোরীর নাম পূজা দাস (১৪)৷ অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী পুজার বাড়ির লোকেরা জানান, এ দিন সকাল ছ’টায় গৃহশিক্ষকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু যেতে চাইছিল না৷ আর তাই তার মা একটু বকাবকি করেন৷
রাকেশ জানান, তারপরই পূজা পড়তে চলে যায়৷ সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন ঘর ভিতর থেকে বন্ধ৷ ডাকাডাকি করেও কোন শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখেন পূজা গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে৷ তারপরেই শুরু হয় বোনকে নিয়ে তাঁর দৌড়।
রাকেশের এই মরিয়া চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়া—মেনে নিতে পারছে না টাকামারি। শোকস্তব্ধ সারা গ্রামই।