প্রতীকী চিত্র।
দলীয় মুখপাত্র বিপি বজগাইয়ের পর দার্জিলিঙে গ্রেফতার করা হল বিমলপন্থী মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তিলকচাঁদ রোকা ও গণেশ গুরুংকে। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, ওই রাতেই লেবংয়ে ভাঙচুর করা হয় জিএলএলএফ নেতা রাজু সুব্বার বাড়ি। সেই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে বিনয়পন্থী মোর্চার দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিনয় শিবিরের নেতারা।
লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচনে পাহাড়ে বিরোধী সব দলই প্রচারে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিল। মিথ্যা মামলায় বহু পাহাড়বাসীকে ফাঁসানো হয়েছে বলেই বিনয়পন্থী মোর্চা ও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। নতুন করে পুলিশি ধরপাকড় চালু হওয়ায় ফের পাহাড় অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও পাল্টা অভিযোগ তুলে বিনয় তামাং বলেন, ‘‘এত দিন পাহাড়ে শান্তি ছিল। বিজেপি জোট জেতার পর থেকেই ফের পাহাড়কে অশান্ত করতে চাইছে। পুলিশ আইন মেনেই তাদের কাজ করছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
বুধবার দার্জিলিং পুরসভায় যখন অনাস্থার চিঠি দিতে যান বিমলপন্থী মোর্চার লোকজন, তখন তাঁর ঘরে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে কর্মীদের একাংশকে মারধর করা হয় বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন পুর চেয়ারপার্সন প্রতিভা রাই। তিনি এখন দার্জিলিং সদর হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তিলকচাঁদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর পুরনো মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন গণেশ। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার তিন জনকেই দার্জিলিং জেলা আদালতে তোলা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বজগাইকে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। তবে তাঁকে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তিলকচাঁদকেও পাঁচ দিনের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। তবে বিচারক আপাতত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। যে ঘটনায় তিলকচাঁদকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই ঘটনায় আহতদের মেডিক্যাল রিপোর্ট আজ, শুক্রবার আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তেলা হয়েছে সবটাই সাজানো, দাবি বিমলপন্থী মোর্চার কার্যকরী সভাপতি লোপসাং লামার। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে পুলিশের পরামর্শে ছক কষে মামলা সাজিয়েছে বিনয় গোষ্ঠী। এর খেসারত দিতে হবে তৃণমূল ও বিনয়কে।’’ জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘‘আমাদের এক নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে। অন্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর পর আমরা বড় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’’ তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি এলবি রাই বলেন, ‘‘পাহাড়ের উন্নয়ন ব্যাহত করতেই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তেলা হচ্ছে।’’