নিজে মাথা ঠান্ডা কর, রবিকে দিদি

গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে মাথা ঠান্ডা রাখার নির্দেশ দিলেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোরে রাজ্য কোর কমিটির বৈঠকে রবীন্দ্রনাথবাবুকে এ ভাবেই সতর্ক করে দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০২:৩৩
Share:

গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে মাথা ঠান্ডা রাখার নির্দেশ দিলেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোরে রাজ্য কোর কমিটির বৈঠকে রবীন্দ্রনাথবাবুকে এ ভাবেই সতর্ক করে দেন তিনি। বক্তব্যের প্রথম সাত মিনিটের মধ্যেই কোচবিহার প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কি এসেছেন?” দূর থেকে উত্তর পেতেই নেত্রী বলেন, “তুমি নিজে মাথা ঠান্ডা কর আগে। লিডার হলে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। মিহির, উদয়ন, অর্ঘ্য রায়প্রধান তোমার কাছে কিন্তু সবাই সমান।”

Advertisement

নেত্রীর ওই বক্তব্যের পরে কোচবিহারে যুব ও তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীরা দাবি করেন, সবাইকে নেত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোচবিহারের ‘লিডার’ রবীন্দ্রনাথবাবুই। তাঁকে গুরুত্ব না দিয়ে কোনও কাজ করা যাবে না। যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের অনুগামীদের অবশ্য পাল্টা দাবি, যুব বা দলের অন্য নেতাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা হলে আগামীদিনে যে ভাল হবে না, সে কথাই নেত্রী এদিন ঠারেঠোরে জেলা সভাপতিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। দলের জেলা শীর্ষ নেতাদের কেউই অবশ্য ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

গত প্রায় দু’বছর ধরেই রবীন্দ্রনাথবাবুর ‘মাথা গরম’ হইচই চলছে কোচবিহারে। সোমবারও দেওয়ানহাটে বিক্ষোভের মুখেও পড়েন তিনি। ওই ঘটনার পিছনে সাংসদ তথা জেলা যুব সভাপতি পার্থবাবুর বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। তা নিয়েই অস্বস্তি তৈরি হয় দলের মধ্যে।

Advertisement

রবির রাগ

• ৬ মে ২০১৬: বিধানসভা নির্বাচনের দিন বুথে ঢুকে পোলিং অফিসার ও সেক্টর অফিসারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ।

• ৬ মে ২০১৬: বিধানসভা নির্বাচনের দিন দলীয় কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে।

• ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭: কোচবিহারের ঘুঘুমারিতে পরিষেবা না মেলার অভিযোগে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা অফিসে ঢুকে কর্মীদের গালি দেওয়ার অভিযোগ।

• ১৪ মে ২০১৮: পঞ্চায়েত নির্বাচনে ডাউয়াগুড়ি ও কলাকাটায় বিজেপির দুই কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ।

• ১৮ জুন ২০১৯: দেওয়ানহাটে যুব কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে রবীন্দ্রনাথবাবু। পরে সাংসদ ও যুব সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানান।

এ দিন তৃণমূল নেত্রী সে ব্যাপারেই সতর্ক করে দেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী এক নেতার কথায়, “রবীন্দ্রনাথবাবুকে সাংগঠনিক ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে একট অংশ। যার জেরেই এমনটা হচ্ছে।” ওই ব্যাপারে পার্থবাবুর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে। পার্থবাবু একসময় রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন গোটা জেলায়। সাংসদ হওয়ার এক বছরের মাথায় দু’জনের সম্পর্ক খারাপ হয় বলে দাবি। পার্থবাবুর এক অনুগামীর কথায়, “সাংসদ ও যুব সভাপতি গুরুত্ব পান না। তাঁকে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন