গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে উদ্যোগী হলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। দক্ষিণ দিনাজপুরের দলের রাশ যে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র ও সাংসদ অর্পিতা ঘোষের হাতেই থাকবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল তাঁর বক্তব্য থেকে।
বিধানসভা ভোটের পর প্রায় এক বছর বাদে এই জেলায় এসে বুনিয়াদপুরের সরকারি সভামঞ্চ থেকে উন্নয়ন কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি বারবার বিপ্লববাবু এবং সাংসদ অর্পিতার নাম উল্লেখ করলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, জেলার সমস্ত ব্লকে প্রচুর কাজ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, এত কিছু সত্ত্বেও অনেক বিধায়ক হেরে গিয়েছেন। তিনি জানান, এই ঘটনায় তিনি খুবই দুঃখ পেয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ যা চাইবেন, তাই দেবেন বলেন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে যান।
পরে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকেও তাঁর সেই সুর বজায় ছিল। পশুপালন দফতরের কাজে অসন্তুষ্ট হন তিনি। জেলায় স্বনির্ভর দলগুলির মহিলাদের রোজগার বাড়াতে হাঁস ও ছাগল বিলির পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম বলে জানিয়ে কাজের গতি বাড়াতে বলেন। জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্পে গতবছর ২৮ দিন শ্রমিকেরা কাজ পেয়েছিলেন। এ বারে তা বেড়ে ৪২ দিন হওয়ায় খুশি মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘প্রয়োজনে জেলায় বছরে ২০০ দিন কাজ চালাবে রাজ্য সরকার।’’
এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার উপর জোর দেন। পরে তিনি বলেন, সয়াবিন, ভুট্টা, চাল, আটা ময়দা থেকে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পকারখানা গড়ার উদ্যোগ নিয়ে ৬ মে শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করতে বলা হয়েছে।
আত্রেয়ীয়ের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। সভা মঞ্চ থেকেই জেলাশাসক এবং মুখ্য সচিবকে বালুরঘাটের আত্রেয়ীর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দেন। পরে বলেন, ‘‘এপ্রিলে আত্রেয়ীর বিষয় নিয়ে দিল্লিতে চিঠি দিয়েছি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে ওপারে বাঁধ দিয়ে কখনও জল আটকানো হচ্ছে। কখনও ওদিকে জল বেড়ে গেলে হঠাৎ করে ছেড়ে দেওয়ায় এপারে নদীর চরে খেতের ফসল ভেসে যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, তবে আত্রেয়ী বিষয়টি যেহেতু আন্তর্জাতিক, তাই তা নিয়ে দিল্লিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আত্রেয়ী নিয়ে দু’দেশের আলোচনার জন্য আবেদন জানাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।