ফাইল চিত্র
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করল জিটিএ। আজ, বুধবার দার্জিলিঙের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়ার জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সফর কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, দার্জিলিং ম্যালে অনুষ্ঠান সেরেই তাঁর কলকাতা রওনা হওয়ার কথা।
মংপু ও সিটংয়ের মাঝে যোগীঘাটে তৈরি করা হবে ওই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। জিটিএ সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয় জন্য সিঙ্কোনা চাষ এলাকার প্রায় ১০০ একর অব্যাহৃত জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৬ একর জমিতে শুরু হবে পরিকাঠামো তৈরি। তবে তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য সেবক থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ‘অ্যাপ্রোচ রোড’ তৈরির কাজও শুরু করেছে জিটিএ।
মঙ্গলবার জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে দার্জিলিং বিশ্ববিদ্যালয় পঠনপাঠন শুরুর লক্ষ্য রয়েছে। তাই দ্রুত রাস্তা তৈরি হচ্ছে।’’
শিক্ষার হাব হিসেবে গোটা দেশ জুড়ে দার্জিলিংয়ের সুনাম আছে। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য পাহাড়ে ১১টি ডিগ্রি কলেজ থাকলেও স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনার জন্য পাহাড়ের ছাত্র ছাত্রীদের সমতলের উপর নির্ভর করতে হয়। সেক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল বা বাড়ি ভাড়া করে থাকতে হয়। ফলে, পড়াশুনার খরচ ক্রমেই বাড়ছে। কয়েক বছর থেকে দার্জিলিং সরকারি কলেজে নেপালি, জুলজি ও বটানি এবং সেন্ট জোসেফ কলেজে ইংরেজিতে এমএ পড়ানো হচ্ছে।
সেন্ট জোসেফ কলেজের ছাত্র সুমন ছেত্রী বলেন, ‘‘পাহাড়ের বিভিন্ন অংশ থেকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস করে বাড়ি ফিরে আসা বাস্তবে সম্ভব হবে না। তাই পর্যাপ্ত সংখ্যায় হস্টেল থাকা অত্যন্ত জরুরি।’’ কালিম্পং কলেজের শিক্ষক দেবাশিস মণ্ডল জানান, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সমতলে গিয়ে নিয়মিত ক্লাস করা ও পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হয়। পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেই সমস্যা আর থাকবে না বলেই মনে করছেন পাহাড়ের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীরা।
জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ভানু ভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করা হবে। সে জন্য ভানু ভবনের কয়েকটি ঘরও সংস্কার করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, পাহাড়ে থাকা কলেজগুলিতেই প্রাথমিক পর্যায়ে বিষয় ভিত্তিক এমএ-র পঠনপাঠন শুরু করা হবে। যাবতীয় কাজের জন্য দ্রুত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, দুই পদের জন্য স্থানীয় শিক্ষাবিদদের নামকেই প্রাধান্য দিচ্ছে শিক্ষা দফতর।