আজ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা

বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুধু পদ্মফুলের প্রতীকেই প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। বিরোধী সব দলের নিচু তলার কর্মীরা ওই গ্রামে গেরুয়া পতাকার নীচেই ভিড় করেছিলেন বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০২:১২
Share:

নির্মল বাংলা প্রকল্পে পাঁচশোরও বেশি শৌচাগার না বানিয়ে বরাদ্দ হওয়া কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন খোদ তৃণমূলের প্রধানও। তখন শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু ব্যবস্থা নিতে দেরি করেনি দল। বহিষ্কারের পরে গ্রেফতার হয়েছেন প্রধান। তবুও পঞ্চায়েত ভোটে পুরোটা সামাল দেওয়া যায়নি। দীর্ঘ দিন পরে ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আসনে পদ্মফুল ফুটেছে, বাকি তেরোটি আসনে দ্বিতীয় স্থান দখল করে পদ্ম কুঁড়ি দেখা যাচ্ছে বলে মেনে নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারাও।

Advertisement

বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুধু পদ্মফুলের প্রতীকেই প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। বিরোধী সব দলের নিচু তলার কর্মীরা ওই গ্রামে গেরুয়া পতাকার নীচেই ভিড় করেছিলেন বলে দাবি। অভিযোগ, তৃণমূলের নেতারা জোর করে বিরোধী প্রার্থী প্রত্যাহার করায়। তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উদাহরণ ধরলে জলপাইগুড়ি জেলার বেশিরভাগ এলাকায় হয় প্রশাসনিক না হলে রাজনৈতিক ভাবে এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি তৃণমূল। একদিকে দলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্প পাইয়ে দেওয়া নিয়ে অভিযোগ, নয়তো বিরোধী শক্তির পদ্ম শিবিরে জড় হওয়া।

এই প্রেক্ষিতেই আজ, সোমবার উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি জেলার সরকারি আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে প্রশাসনিক পর্যালোচনার বৈঠকে বসছেন। দলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের এ দিন মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে জেলার রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের।

Advertisement

আজ সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামবেন। সেখান থেকে সোজা উত্তরকন্যায়। সফরের প্রথম দিনেই জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক বৈঠক। আগামী পাঁচ দিন মুখ্যমন্ত্রীর থাকার কথা উত্তরবঙ্গে। জলপাইগুড়ির পরে আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন তিনি। যাওয়ার কথা রয়েছে চ্যাংড়াবান্ধায়। সেখানে কোচবিহার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে। এ বার মুখ্যমন্ত্রী চা উপদেষ্টা কাউন্সিলের বৈঠকও করবেন বলে খবর।

পঞ্চায়েত ভোটের পরে চা বলয়ও তৃণমূলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত বিধানসভা ভোটে চা বলয়ে তৃণমূলের জয়জয়াকার দেখা গেলেও পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির ভোট তৃণমূলকে চিন্তায় রেখেছে। চা অধ্যুষিত এলাকায় একটি জেলা পরিষদ আসন, পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হয়েছে শাসক দলের। একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে গিয়েছে বিজেপির। গত বিধানসভায় জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভা দখলে গিয়েছিল কংগ্রেসের।

তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “যে সব জেলায় বাম এবং কংগ্রেস কিছু দিন আগেও ভাল সংগঠন ধরে রাখতে পেরেছিল, সে সব এলাকায় এখন তাদের শক্তিক্ষয় হচ্ছে। নিচু তলার কর্মীরা চলে যাচ্ছেন বিজেপিতে। সেটা ঠেকানোও আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ।” প্রশাসনিক সভা হলেও তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন উত্তরকন্যায়। তাঁরা দলের জেলা থেকে বুথ বিভিন্ন কমিটির মাথা। লোকসভার আগে তাঁদের কতটা ঘাম ঝরাতে হবে হবে তার বার্তা মুখ্যমন্ত্রী দেবেন বলেই দলের অন্দরের খবর। সেই সঙ্গে প্রশাসনকে সক্রিয় এবং স্বচ্ছতার বার্তাও দিতে পারেন।

এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে জোর কদমে প্রস্তুতি চলছে আলিপুরদুয়ারে। আগামী ১১ জুলাই উত্তরকন্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। প্রথম তা বীরপাড়ায় করার কথা হলেও পরে উত্তরকন্যাই ঠিক হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন