কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতারা ধর্মঘটে দফতরে

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে রাজ্য জুড়ে ডাকা ধর্মঘটে শিলিগুড়ির চারটি ব্লকে বাম কো-অর্ডিনেশনের নেতারা এ দিন অফিসে গিয়েছেন। তা দেখে সংগঠনের অন্যরাও অনেকে ধর্মঘট পালনে উৎসাহ হারিয়েছে। এমনকী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলেও ধর্মঘটের পক্ষে যে অনেকে থাকতে চান না ঘনিষ্ঠ মহলে সেই কথাও বলেছেন। মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘আমার দফতরে এবং ব্লক অফিসগুলিতে কর্মীদের হাজিরা ১০০ শতাংশই ছিল।’’

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৫ ০৪:৪০
Share:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে রাজ্য জুড়ে ডাকা ধর্মঘটে শিলিগুড়ির চারটি ব্লকে বাম কো-অর্ডিনেশনের নেতারা এ দিন অফিসে গিয়েছেন। তা দেখে সংগঠনের অন্যরাও অনেকে ধর্মঘট পালনে উৎসাহ হারিয়েছে। এমনকী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলেও ধর্মঘটের পক্ষে যে অনেকে থাকতে চান না ঘনিষ্ঠ মহলে সেই কথাও বলেছেন। মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘আমার দফতরে এবং ব্লক অফিসগুলিতে কর্মীদের হাজিরা ১০০ শতাংশই ছিল।’’

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরসভাতেও বাম কর্মী সংগঠন শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যাল এমপ্লয়িজ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের অনেকেই এ দিন কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে সংগঠনের সম্পাদক জীবন নাথ বলেন, ‘‘জরুরি পরিষেবার আওতায় থাকায় সাফাই, বিদ্যুৎ, গাড়ির চালক, স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা হাজির ছিলেন। স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে বলে অন্য বনধেও তাঁদের বিষয়টি ছাড় থাকে।’’ তাঁদের বাদ দিয়ে অফিসের কর্মী তাদের সংগঠনের অন্তত ১৫০ জন এ দিন কাজে যোগ দেননি বলে দাবি করেন। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘ধর্মঘটের দিনে কাজে যোগ দিতে কর্মী আধিকারিকদের জানিয়ে দেওযা হয়েছিল। তার পরেও এ দিন যারা আসেননি তাদের শোকজ করা হবে।’’

ধর্মঘট নিয়ে নিরুৎসাহী কো-অর্ডিনেশনের একাংশ। সংগঠনের নকশালবাড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক বিজয় ভুঁই এ দিন কাজে যোগ দেন। তিনি নকশালবাড়ি হাসপাতালের কর্মী। বিজয়বাবু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টি ধর্মঘটের আওতার বাইরে। তাই আমাদের তো অফিসে যেতেই হবে।’’ ফাঁসিদেওয়া ব্লকের কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক প্রদীপ দাস। তিনি ধর্মঘট পালনে রাস্তায় নামেননি। ব্লক অফিসে কাজেও যাননি। খড়িবাড়ি ব্লকের কো-অডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মদন মোহন মন্ডল বলেন, ‘‘ধর্মঘট সমর্থন করেছি। অফিসে যেতে পারিনি।’’

Advertisement

মাটিগাড়া ব্লকের সংগঠনের সম্পাদক পলাশ ঘোষ অবশ্য দাবি করেন ব্লকে তাদের আশি শতাংশ কর্মী ধর্মঘট পালন করেছেন। তবে তাঁর বক্তব্য মানতে চায়নি প্রশাসনের কর্তারা। কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক উত্তম চতুর্বেদীর দাবি, অস্থায়ী পদে গ্রাম পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিকরা রয়েছেন। তাঁরা এ দিন কাজে গিয়েছিলেন। সেটাকেই তুলে ধরে প্রশাসন একশো শতাংশ কর্মী এসেছে বলে দাবি করতে পারেন। তবে কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, প্রশাসনের তরফে এ দিন অফিসে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় বেতন কাটার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়। সে কারণেও অনেকেই শেষ বেলায় অফিসে গিয়ে হাজিরা দিয়েছেন বলে জানান।

এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরে ৫৮টি কলেজে স্নাতক স্তরে পার্ট-১ এবং পার্ট-২ পরীক্ষা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের ডেপুটি নিয়ামক দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘কলেজগুলিতে পরীক্ষা এ দিন নির্বিঘ্নেই হয়েছে। কোথাও কোনও গোলমাল হয়েছে বলে খবর আসেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন