কোচবিহার শহরে বন্ধের বিরোধিতা করে তৃণমূলের মিছিল। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
বুধবার বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার বাংলা বন্ধের সমর্থন-বিরোধিতায় মিছিল, পাল্টা মিছিলে সরগরম হয়ে উঠছে কোচবিহারের রাজনৈতিক আবহ। গত লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহারে দ্বিতীয় স্থানে ওঠে আসে বিজেপি। তৃণমূলেও জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতে পদ্মকাঁটা নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি। তাই সামনে লোকসভা ভোটের আগে সাংগঠনিক ভিত যাচাই, কর্মী সমর্থকদের চাঙা করা, শক্তি মেপে নেওয়ার চেষ্টায় খামতি রাখতে চাইছেন না যুযুধান শিবির। বন্ধ নিয়ে দুই পক্ষের প্রচার যুদ্ধে সেটা স্পষ্ট।
তৃণমূল শিবির অবশ্য প্রকাশ্যে জেলায় বিজেপিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পুজোর মুখে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ধ্বংসাত্মক ওই বন্ধ ডাকা হয়েছে। সাধারণ মানুষ বন্ধ প্রত্যাখ্যান করবেন।” উল্টো দিকে, বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “মানুষ বুধবার দিন স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দেবেন।”
সোমবার দুপুরে তৃণমূল দফতর থেকে ওই মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে। তুমুল বৃষ্টির জেরে মিছিল নির্ধারিত সময়ে শুরু করা না গেলেও কর্মীরা অপেক্ষা করেন। বৃষ্টি থামলে ওই মিছিল শুরু হয়। পুরোভাগে ছিলেন শুচিস্মিতা দেবশর্মা, নিরঞ্জন দত্ত, খোকন নাগ প্রমুখ। সন্ধ্যায় যুব তৃণমূলের তরফেও কোচবিহারে মিছিল করা হয়েছে। একই ইস্যুতে যুব সংগঠনের পৃথক মিছিল দলের মূল সংগঠনের সঙ্গে কোন্দলের জের বলেও দলের অন্দরেই অবশ্য গুঞ্জন রয়েছে। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “সমস্ত শাখা সংগঠনকেই বন্ধ বিরোধিতায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন নেতৃত্ব।” ওই মিছিলে বিধায়ক মিহির গোস্বামীও অংশ নেন। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “গোষ্ঠী কোন্দলের ব্যাপারই নেই। সকলেই বন্ধের বিরোধিতার পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।”
সন্ধ্যায় শহরের ব্যাঙচাতরা রোড এলাকার দলীয় অফিস থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা মিছিল বের করেন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে। কর্মী বৈঠক হচ্ছে। দুই শিবিরেরই দাবি, ইসলামপুর কাণ্ড নিয়ে ডাকা বন্ধে জনসমর্থনের হাওয়া তাঁদের পালেই আছে বলে দাবি করেছে দুই পক্ষই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কোচবিহারে ৮৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিল তৃণমূল। বামেরা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। বিজেপি তৃতীয় স্থান পায়। ২০১৬ সালে ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ব্যবধান বাড়িয়ে ৪ লক্ষাধিক ভোটে তৃণমূল জিতলেও বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। কিন্তু তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিজেপিই দ্রুত জমি দখল করছে বলে দাবি অনেকের।