কানাইয়ালাল ভেজাল, তোপ করিম চৌধুরীর

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও কোনও ভাবেই ইসলামপুরের কংগ্রেসের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালকে মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন মন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২২
Share:

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও কোনও ভাবেই ইসলামপুরের কংগ্রেসের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালকে মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন মন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম চৌধুরী। কানাইয়ালাল ও তাঁর অনুগামীদের এর মধ্যেই পৃথগন্ন করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওরা ভেজাল, ভেজাল হিসেবেই থাকবে!’’

Advertisement

করিম চৌধুরীর যাবতীয় ক্ষোভ গিয়ে পড়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে। তিনি বলেন, ‘‘দলনেত্রীর সিদ্ধান্তে আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি। আমার আশা ছিল, ইসলামপুরের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তা নয়, দলের মধ্যে থাকা কিছু বিশ্বাসঘাতকের কথা শুনে শুভেন্দু অধিকারীর ভুলে একটি পৃথক দলই তৈরি করে ফেলা হল!’’

মাত্র পাঁচ মাস আগে এই কানাইয়ালালের কাছেই হারতে হয়েছে করিমকে। কংগ্রেস-সিপিএম সমঝোতার প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন কানাইয়ালাল। এবং তাঁকে প্রার্থী করার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতারা। বামফ্রন্ট মনোনীত জেডিইউ-র প্রার্থীর বদলে কানাইয়ালালই হয়ে উঠেছিলেন তথাকথিত জোটের মুখ। জোরদার লড়াইয়ে তিনি করিমকে হারিয়ে দেন। তার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে কানাইলালের এমন ভোলবদলে করিম ও তাঁর অনুগামীরা দৃশ্যতই হতাশ।

Advertisement

মঙ্গলবারই জানা যায়, তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কানাইয়ালাল। বুধবার কলকাতায় আনুষ্ঠানিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন করেন তিনি। এই ঘটনার বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু করেন প্রাক্তন মন্ত্রীর অনুগামীরা। করিম চৌধুরীর ছেলে মেহতাব চৌধুরীর নেতৃত্বে মঙ্গলবারও ইসলামপুর শহরে ধিক্কার মিছিল করে তৃণমূল। এই যোগদান পর্ব নিয়ে ইসলামপুরে তৃণমূল স্পষ্টতই দ্বিধা বিভক্ত। কে কোন দিকে থাকবে, তাই নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে কর্মীদের মধ্যে। করিম চৌধুরী জানান, ‘‘ভেবেছিলাম দল ছেড়ে বসে যাব। কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলে থাকাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।’’

ন’বারের বিধায়ক করিম। তাঁর দাদাও চার বারের বিধায়ক। কানাইয়ালাল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ফলে দলে করিমের কদর কমতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। করিমের কথার প্রেক্ষিতে কানাইয়ালাল বলেছেন, ‘‘দলে এসেছি, দল করব। উনি কী বলছেন, তা জানি না।’’ জানালেন, ‘‘বাকি কাউন্সিলাররাও আমার সঙ্গে রয়েছেন। আগামী শনিবার তাঁরাও তৃণমূলে যোগ দেবেন।’’

ইসলামপুর পুরসভার মোট আসন সংখ্যা ১৭টি। সেখানে প্রথম ভাঙন ধরান করিম চৌধুরীই। সম্প্রতি এক কংগ্রেসি ও দুই বিজেপি কাউন্সিলর তাঁর হাত ধরেই তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু বাকিটা গতি পায় কানাইয়ালাল আসার খবরে।

দলবদল নিয়ে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘লোভে পড়ে অনেকেই দল বদলাচ্ছেন। ইসলামপুরের কানাইয়ালালও তেমন করেছেন বলে শুনেছি। এলাকার মানুষ জোট প্রার্থী হিসেবে তাঁকে জিতিয়েছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে সম্মান হারিয়েছেন। এলাকার মানুষ তাঁকে কোন ভাবেই আর মেনে নেবেন না।’’

তবে বিষয়টি নিয়ে ইসলামপুরের কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছে। কংগ্রেসের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হুসেন বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন