পুলিশ এল, আবার ফিরেও গেল

ব্রিফিংয়ের পরে সকলকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অপেক্ষা করতে বলা হয়। সেখান থেকেই অভিযান শুরু হবে বলে জানানোও হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১৪
Share:

বাহিনী: মঙ্গলবার রাতে থানায়। নিজস্ব চিত্র

আশেপাশের পাঁচটি থানার ওসি-আইসিদের ডেকে এনে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ লাইনে ‘ব্রিফিং’ করা হয়েছিল। পুলিশ অফিসারদের জানানো হয়েছিল, বিশেষ ‘রেড’ হতে চলেছে। ব্রিফিংয়ের পরে সকলকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অপেক্ষা করতে বলা হয়। সেখান থেকেই অভিযান শুরু হবে বলে জানানোও হয়।

Advertisement

মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় সুনসান কোতোয়ালি থানা লাগোয়া এলাকা ব্যস্ত হয়ে পড়ে পুলিশের গাড়ি আর বাহিনীর ভিড়ে। জংলা থেকে খাকি— নানা ধরনের উর্দি পরা পুলিশকে ঢাল, লাঠি, বন্দুক হাতে থানার সামনে জড়ো হয়ে থাকতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায় শহরেও। এর পরেই হঠাৎ পুলিশ কন্ট্রোল থেকে নির্দেশ আসে, ফিরে যাও। এত তোড়জোড়ের পরে কেন অভিযান আচমকা গুটিয়ে ফেলা হল, তা নিয়ে পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ, সব মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।

জেলা পুলিশের অফিসারেরা অভিযান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্তার কথায়, “এ তো হতেই পারে। অভিযান হবে বলে স্থির হয়েছিল। পরে দেখা গিয়েছে এখনই অভিযানের আদর্শ পরিস্থিতি নেই। তাই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।” পুলিশের একটি সূত্রের খবর, গত রবিবার শহর লাগোয়া পাহাড়পুরে একটি সভা ঘিরে সংঘর্ষ হয়। শাসকদলের তরফে অভিযোগ করা হয়, তাদের উপরে হামলা চালিয়েছে যুব তৃণমূল নেতার অনুগামীরা। যুব তৃণমূলের তরফে আবার পাল্টা অভিযোগের আঙুল তোলা হয় তৃণমূলের দিকে।

Advertisement

সোমবার ওই ঘটনায় জেলা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস ও তাঁর অনুগামীদের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় স্মারকলিপি দেয় যুব তৃণমূল। কৃষ্ণবাবুর অনুগামীরা পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। কোনও রকম বিশৃঙ্খলা যে দল বরদাস্ত করবে না, সে বার্তা দিতেই মঙ্গলবার পুলিশি অভিযানের নির্দেশ এসেছিল বলে অভিমত জেলার তৃণমূলের একটি অংশের। এই সিদ্ধান্তে দলেরই নেতাদের একাংশ ক্ষোভ জানায় বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। বাড়িতে পুলিশ গেলে কোনও নেতা-কর্মীর ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে বলেও দাবি তোলা হয়। এর পরেই আইনশৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় অভিযান আপাতত স্থগিত রাখা হয় বলে সূত্রের খবর। পুলিশের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, অভিযান স্থগিত রাখার কোনও বিষয় নেই। বুধবার সন্ধ্যেয় পুলিশের তরফে জানানো হয়, রাতে ফের অভিযান হবে।

এই নিয়ে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযানের বিষয়ে কিছু জানা নেই। দলের মধ্যে কোনও গোলমাল। কিছু ভুল বোঝাবুঝি যদি থাকেও, আলোচনার মাধ্যমেই তা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার কথা দলকে আগেই বলেছি। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন