আদালতের নয়া ভবন নিয়ে ফের জটিলতা

ফের জটিলতার মুখে শিলিগুড়ি আদালতের নয়া ভবন তৈরি। পুরনো ভবন ছাড়তে বেঁকে বসলেন শিলিগুড়ি আদালতের মুহুরিরা। মঙ্গলবার সরকারিভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের দফতরে চিঠি দিয়ে আপত্তির কথা জানান তাঁরা। শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন নির্মাণ করতে হলে মুহুরিদের বর্তমান জায়গা থেকে সরাতে হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে রাজি না হলেও পরে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শর্ত সাপেক্ষে মুহুরিদের সংগঠন সে প্রস্তাবে রাজিও হন।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০২:২৪
Share:

ফের জটিলতার মুখে শিলিগুড়ি আদালতের নয়া ভবন তৈরি। পুরনো ভবন ছাড়তে বেঁকে বসলেন শিলিগুড়ি আদালতের মুহুরিরা। মঙ্গলবার সরকারিভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের দফতরে চিঠি দিয়ে আপত্তির কথা জানান তাঁরা। শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন নির্মাণ করতে হলে মুহুরিদের বর্তমান জায়গা থেকে সরাতে হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে রাজি না হলেও পরে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শর্ত সাপেক্ষে মুহুরিদের সংগঠন সে প্রস্তাবে রাজিও হন। তাঁদের শর্তের খেলাপ করা হয়েছে দাবি তুলে সোমবার তাঁরা সাংগঠনিক ভাবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। সোমবার বৈঠক করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মুহুরিদের সংগঠনের তরফে কোনও বার্তা তাদের কাছে পৌঁছয়নি। যদিও, মুহুরিদের সংগঠনের আপত্তিতে নতুন করে নির্মাণে জটিলতা তৈরি হল বলেই আইনজীবী এবং প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন।

Advertisement

সম্প্রতি আদালত ভবন নির্মাণের বিষয়ে জটিলতা কাটাতে আইনজীবী এবং মুহুরিদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এর আগে সমস্যা তৈরি হওয়ায় আমি আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করে দিয়েছিলাম। তাতে সব পক্ষের সম্মতিতে স্থির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এখন নতুন করে সমস্যা তৈরি হলে, আশা করি নিজেরাই মিটিয়ে নেবেন।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে দেওয়া ২৮ লক্ষ টাকায় মুহুরিদের জন্য স্থায়ী কাঠামোই তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। সব পক্ষের উপস্থিতিতে নেওয়া লিখিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই কাজ হচ্ছে বলে এ দিন দাবি করেছেন শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য চন্দন দে। তাঁর দাবি, ‘‘যা কথা হয়েছিল তাই কাজ হচ্ছে। এখন নতুন করে সিদ্ধান্তের খেলাপ করা হলে আইনি পথেই তার মোকাবিলা হবে।’’

কেন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন মুহুরি সংগঠনের? সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, নতুন ভবনে তাদের জন্য প্রতিশ্রুতিমত জায়গা দেওয়া হয়নি। সংগঠনের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আদালতের নতুন ভবন তৈরির জন্য আমাদের জায়গা ছাড়তে হবে বলে জানানো হয়েছিল। নতুন জায়গায় সাড়ে তিন হাজার বর্গমিটার জমিতে স্থায়ী ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছিল। সে কারণেই আমরা রাজি হই। কিন্তু হঠাৎ বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভায় ডেকে আমাদের জানানো হয় আমরা ২৬০০ বর্গমিটার জায়গাই পাব। এতেই আমাদের আপত্তি।’’

Advertisement

২০১২ সালে তৎকালীন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে নিয়ে বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল বর্তমান আদালত চত্বরেই আদালত ভবন নির্মাণের কথা বলেন। সূত্রের খবর, পরে মন্ত্রী গৌতমবাবু মাটিগাড়ার কাছে আদালত ভবন করা হবে বলে জানালে বার অ্যাসোসিয়েশন আপত্তি করে। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দীর্ঘদিন কর্মবিরতি পালনও করা হয়। পরে আইনজীবীদের দাবি মেনে পুরোনো জায়গাতেই করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তাতে মুহুরিদের বর্তমান জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় যেতে হবে বলে স্থির হয়। গত জানুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, আইনজীবী ও মুহুরিদের নিয়ে বৈঠকে মুহুরিদের জন্য নতুন ভবন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন