দ্বিতীয় ইনিংসে ময়দানে নেমে সাংগঠনিক শক্তি দেখাতে বিশাল জমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর খাস তালুক বালুরঘাটে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ ঘটাতে আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছেন বিপ্লববাবু। তাঁর অনুগামী পুরনোদের মাঠে নামিয়েছেন। নিজেও রোজ পালা করে ব্লকে ব্লকে সভা করে কর্মীদের সমর্থন ঝালাই করে নিচ্ছেন।
গত বিধানসভা ভোটের মাত্র দু’মাস আগে বিপ্লববাবুকে সরিয়ে শঙ্করবাবুকে তৃণমূল জেলা সভাপতি করা হয়। তারপর থেকে জেলার রাজনীতি শঙ্করবাবুকে ঘিরে আবর্তিত হতে থাকলেও গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের সংসার। দলকে অক্সিজেন দিতে প্রচারে হিলি থেকে হরিরামপুর ছুটতে হয় সাংসদ অর্পিতা ঘোষকে। কিন্তু ভোটের মুখে মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে চিকিৎসার জন্য তার ঠিকানা হয় কলকাতার হাসপাতাল। বিধানসভা ভোটে জেলায় ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতেই হারে তৃণমূল। কোনঠাসা হয়ে বিপ্লববাবুও নিজেকে গুটিয়ে নেন। শঙ্করবাবুও দফতরের কাজের চাপ সামলে জেলায় সময় দিতে পারছিলেন না বলে দলকে জানালে গত মাসে বিপ্লববাবুর হাতে ফের জেলার দায়িত্ব তুলে দেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব।
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষে দীর্ঘদিনের তৃণমূল সংগঠক বিপ্লববাবুও শক্তি যাচাই করে নিতে চান। দ্বিতীয় দফায় সেই সুযোগ পেয়ে জেলা নেতৃত্বকে একত্রিত করতে একমঞ্চে সামিলের ডাক দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বালুরঘাটের পুরনো তৃণমূল সংগঠক দেবাশিস মজুমদার, বিভাস চট্টোপাধ্যায়দের মতো একগুচ্ছ নেতাকে তুলে এনেছেন। বিপ্লব খাঁ, ব্রতময় সরকারদের মতো এলাকার পোড় খাওয়া নেতাদের কেউ মঞ্চ তৈরি, কেউ মিছিলের দায়িত্ব পেয়ে তৎপরতা বাড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বালুরঘাট শহরের থানা মোড়ে অনুষ্ঠিত হবে বিপ্লব মিত্রের জনসভা। মূল বক্তা তিনিই। দল সূত্রের খবর, ওই জনসভায় তৃণমূলের কোনও রাজ্য নেতাকে ডাকা হচ্ছে না। জেলা নেতৃত্ব এবং সাংসদের উপস্থিতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জেলার আটটি ব্লক থেকে ওই সভায় লোক আনতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অফিসপাড়া বলে পরিচিত ওই এলাকার তেমাথার মোড়ে রাস্তা জুড়ে আয়োজিত জন সমাবেশে সভামঞ্চে থাকা নেতৃত্বকে সকলে যাতে দেখতে পান, তাই উঁচু করে মণ্ডপ বাঁধা হচ্ছে। গোটা শহর জুড়ে বসছে ৬টি জায়েন্ট স্ক্রিন। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘জেলা তৃণমূলে সকলে এক।’’ বিরোধীরা ওই জন সমাবেশ থেকে ঐক্যের দৃঢ ছবি দেখবে বলে বিপ্লববাবু দাবি করেন। এ দিন কলকাতা থেকে বালুরঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের জনসভায় অবশ্যই উপস্থিত থাকব।