Padma Awards 2024

পদ্মশ্রী কোচবিহারের গীতা রায় বর্মনকে, ভাওয়াইয়া গানকে বাঁচাতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান

ভাওয়াইয়া গান গাওয়াই শুধু নয়, নিজের উদ্যোগে এই গানের ধারাকে বাঁচিয়ে রাখতে একটি স্কুলও চালান গীতা। তাঁর আক্ষেপ, সর্বস্তরে প্রচারের অভাবে ভাওয়াইয়া গান পিছিয়ে পড়ছে প্রতিযোগিতায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:২১
Share:

পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত গীতা রায় বর্মন। — নিজস্ব চিত্র।

পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন কোচবিহারের ভাওয়াইয়া শিল্পী গীতা রায় বর্মন। শুধু নিজে গাওয়া নয়, নিজের উদ্যোগে একটি ভাওয়াইয়া গানের স্কুলও চালান তিনি। পদ্মসম্মান পেয়ে খুশি শিল্পী জানাচ্ছেন, এই সম্মান ভাওয়াইয়া গানের শৈলীকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে সাহায্য করলেই তাঁর জীবন সার্থক হবে।

Advertisement

উত্তরের গ্রামবাংলার নিজস্ব ভাওয়াইয়া গান। কৃষিজীবী থেকে শুরু করে মাঝিমাল্লা— তিস্তাপারের ভাওয়াইয়া গানে মিশে আছে মাটির গন্ধ। কিন্তু ডিজের দাপটে সেই ভাওয়াইয়া আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। সেই শৈলীর গান গেয়ে বছরের পর বছর মানুষকে মুগ্ধ করছেন গীতা। ২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেই পরিশ্রমের খানিকটা হলেও স্বীকৃতি পেলেন পদ্মসম্মানের মধ্যে দিয়ে। কোচবিহারের শীতলখুচি ব্লকে জন্ম গীতার। সেখানেই ভাওয়াইয়া গানের তালিম নেওয়া দাদুর কাছ থেকে। রাজ্যস্তরে একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন গীতা। বিয়ের পর গীতা কোচবিহারেরই মাথাভাঙায় থাকেন। সেখানেই চলতে থাকে গানের চর্চা। সেই গীতাই এ বার পদ্মশ্রী পেলেন।

গীতার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উঠে এল হাল আমলের সঙ্গীতের আগ্রাসনের কাছে ভাওয়াইয়ার কোণঠাসা হওয়ার কথা। যা কষ্ট দেয় গীতাকে। ভাওয়াইয়া যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্য গীতা নিজেই একটি স্কুল চালান। কিন্তু তাতেও ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা মনখারাপ করিয়ে দেয় শিল্পীর। তিস্তাপারের ভাওয়াইয়া নিয়ে আগে যে উন্মাদনা তিনি দেখেছেন, আজ যেন তা স্মৃতি। শিল্পীর কথায়, ‘‘অবশ্যই ভাঁটা পড়েছে। ১৯৯৬-৯৭ সালে যে জোয়ার ছিল ভাওয়াইয়ার তা এখন নেই। আগে প্রতি ব্লকে তিনশো-চারশো ভাওয়াইয়া শিল্পী থাকতেন। এখন তিরিশ জনকেও খুঁজে পাবেন না। এক জন ভাওয়াইয়া শিল্পী হিসাবে এটা ভাবলে খুব কষ্ট হয়।’’

Advertisement

কিন্তু একদা যে সুরই ছিল এলাকার পরিচয়, আজ তার আমূল বদল ঘটেছে। এই অবনমনের পিছনে শিল্পীদের কোনও ভূমিকা আছে? সদ্য পদ্মশ্রী পাওয়া গীতা বলছেন, ‌‘‘মাটির গান তো ভালবাসা থেকে গাওয়া হয়। এ জন্য আলাদা করে কোনও প্রচার তো হয় না। টিভিতে জনপ্রিয় গানের অনুষ্ঠানেও এই ধরনের গান কম গাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করি। ভাওয়াইয়া শিল্পীদের আরও প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে হবে। তাতে সরকারের যেমন দায়িত্ব আছে, সাধারণ মানুষেরও মাটির গানকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’’

গীতা এই সম্মান পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত মাথাভাঙা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। আনন্দের এই দিনে গীতার বাড়িতে মানুষের ঢল। সকলেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শিল্পীকে। চলছে মিষ্টিমুখের পালা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন