Herbal Garden

ভেষজ বাগান গড়ে লড়াই ‘তুলসী গ্রামের’

এমনিতেই কোচবিহারের মতো জেলায় তুলসী, কালমেঘ, পাথরকুচি, কুলেখাড়া গাছের  চাহিদা প্রচুর।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ০৭:১৩
Share:

অসচেতন: কোচবিহারের হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

ওঁরাও লড়াইয়ে সামিল। সংসার সামলে নেমে পড়েন মাঠে। প্রখর রোদ থেকে বৃষ্টি— কিছুই ওঁদের আটকে রাখতে পারে না। তাঁরা মুখে মাস্ক পরে ভেষজ উদ্যানের আগাছা পরিস্কার করেন। সেই সঙ্গেই চলতে থাকে কোভিড নিয়ে সচেতনতার প্রচার। কোচবিহারের নাটাবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলতি বর্মণ, নিবেদিতা পাল, শান্তি দাস বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লড়াই শুরু হয়েছিল আমাদের আগে থেকেই। সে জন্যেই বাড়িতে ভেষজ উদ্যান তৈরি করি। করোনা কালে তা আরও বেড়ে যায়। সবাই মিলেই সতর্ক ভাবে থাকার চেষ্টা করছি।”

Advertisement

২০১৮ সালে নাটাবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক বাসবকান্তি দিন্দা প্রতিটি বাড়িতে ভেষজ বাগান করার উদ্যোগ নেন। তিনি বলেন, “ভেষজ বাগান তৈরি করতে পারলে অনেক উপকার। ওই ভেষজ ওষুধ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সক্ষম। আয়ুষ মন্ত্রকের নির্দেশ মেনেই আমরা সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছি।”

এমনিতেই কোচবিহারের মতো জেলায় তুলসী, কালমেঘ, পাথরকুচি, কুলেখাড়া গাছের চাহিদা প্রচুর। অনেকেই নিজের বাড়িতে ওই গাছ রোপণ করেন। নিয়মিত তা ওষুধের মতো ব্যবহার করেন। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য কুলেখাড়া রস, পেটের সমস্যা সমাধানে কালমেঘের রস। এছাড়া করোনা কালে আয়ুষ মন্ত্রক ভেষজ চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দুধের সঙ্গে হলুদ গুড়ো খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই গ্রামগুলিতে আগে থেকেই ওই চাষ শুরু হয়েছিল। নাটাবাড়ির ভেলাপেটা গ্রামকে অনেকেই ‘তুলসী গ্রাম’ বলেও চেনেন। ওই গ্রামে প্রচুর মানুষ তুলসী গাছের বাগান তৈরি করেছেন। তুলসীর সঙ্গে চাষ হচ্ছে কালমেঘ, পুদিনা, ব্রাহ্মী, পাথরকুচি, ঘৃতকুমারী, নয়নতারা, গুলঞ্চ।

Advertisement

ধীরে ধীরে পাশের গ্রাম চারালজানি-সহ অনেক গ্রামেই ছড়িয়ে পড়ে ভেষজ উদ্যান তৈরির আগ্রহ। একাধিক স্বর্নিভর গোষ্ঠীকে ওই বাগান তৈরিতে সহায়তা করে সরকার।

স্বনির্ভর গোষ্টীর সদস্যরা জানান, ভেষজ দ্রব্য তৈরি করার কাজও করছেন তাঁরা। তার মধ্যে রয়েছে তুলসী চা, আমলা ক্যান্ডি, হলুদ গুড়ো, কুলেখাড়া রস, কালমেঘ রস। তা বাজারজাত করতে সহযোগিতা করছে সরকার। কোচবিহার শহরে রেখে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে খুশি ওঁরা। গ্রামের কয়েক জন মহিলা বলেন, “ভেষজ উদ্যান তৈরিতে নেমে আমরা কোভিডের কথা জানতে পেরেছি। চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব পালন বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষকেও সে কথা জানানোর চেষ্টা করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement