Coronavirus

রেলপথে ময়ূর, রাস্তায় হাতিরা

বনকর্মীদের চোখে পড়ছে, গরুমারা লাগোয়া লাটাগুড়ির পিচ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিতল হরিণ। বড়দিঘি চা বাগানের নালায় চিতাবাঘের শাবকদের খুনসুটিও দেখা যাচ্ছে বলে বনকর্মীরা জানাচ্ছেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি

নিস্তব্ধতা খানখান করে দানবীয় ভঙ্গিতে ট্রেনের ইঞ্জিনের ছুটে চলা নেই। যাতায়াত নেই পর্যটক বোঝাই জিপসির। জঙ্গলের বুক চিরে যাওয়া পিচরাস্তা দিয়ে নাগাড়ে গাড়িও চলছে না এখন। করোনা সংক্রমণ রুখতে চলা লকডাউনের জেরে বন্ধ সবই। নিস্তব্ধতা ফিরে এসেছে গরুমারা-চাপরামাড়ি, কাঠামবাড়ি এবং বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলে।

Advertisement

আর এর জেরেই জঙ্গলের আশেপাশেও ঘুরতে শুরু করেছে বুনোরা।

বনকর্মীদের চোখে পড়ছে, গরুমারা লাগোয়া লাটাগুড়ির পিচ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিতল হরিণ। বড়দিঘি চা বাগানের নালায় চিতাবাঘের শাবকদের খুনসুটিও দেখা যাচ্ছে বলে বনকর্মীরা জানাচ্ছেন। ঝরা পাতায় ঢেকে গিয়েছে চাপরামাড়ি জঙ্গলের মাঝ দিয়ে যাওয়া রেল লাইন। গত কয়েকদিন এই পথ দিয়ে একটিও ট্রেন যায়নি। রেলপথ বরাবরা নিশ্চিন্তে হেঁটে যাচ্ছে ময়ূর।

Advertisement

গরুমারার গেট থেকে জঙ্গল চিরে একেবেঁকে রাস্তা চলে গিয়েছে যাত্রাপ্রসাদ নজরমিনারে। প্রায় সাত কিলোমিটার লম্বা পাথুরে এই রাস্তায় দিনে চার পর্যায়ে জঙ্গল সাফারি হয়। বনকর্মীদের দাবি, গাড়ির শব্দে বুনোরা সাধারণত সেই রাস্তার আশেপাশে আসতো না। এখন ছবিটা আলাদা। গরুমারার জঙ্গলের এক বনাধিকারিক বললেন, “বার্কিং ডিয়ার, স্পটেড ডিয়ার এবং সম্বর। সব ওই রাস্তা দিয়ে নিশ্চিন্তে চলাফেরা করছে।”

গরুমারার জঙ্গলের একপাশ দিয়ে ব্যস্ত জাতীয় সড়ক গিয়েছে। লকডাউনের কারণে সেই রাস্তাও সুনসান। গত রবিবার রাস্তায় উঠে এসেছিল হাতির দল। অন্য সময় হলে লোকজনের চেঁচামেচি, নিজস্বী তোলার হুড়োহুড়িতে একদন্ডও থাকতে পারত না বুনোদের দলটি। রবিবার প্রায় দেড় ঘণ্টা জাতীয় সড়কে ঘোরাফেরা করছে হাতির দলটি। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “বুনোরা মহানন্দে রয়েছে। দূষণ নেই, জঙ্গলের দখল নিয়ে মানুষের সঙ্গে লড়াই নেই। ওরা নিজেদের মতো আছে, নিজেদের মর্জি মতো ঘুরেও বেড়াচ্ছে।”

তবে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বুনোদের বেরনো বন্ধ হয়নি। দিন দুয়েক আগেই ফালাকাটায় বাইসন ঢুকে পড়েছিল। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে হাতির দল এসেছিল জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া একট গ্রামে।

এক বনকর্মীর কথায়, “এখন জঙ্গলে গিয়ে মানুষেরা বুনোদের বিরক্ত করছে না। তাই হয়ত ওরা জঙ্গল থেকে বেশি বেরোচ্ছে না।”

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন