আয়োজন: দোকানে অক্ষয় তৃতীয়া। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে বন্ধ ব্যবসা। সংসার টানতেই সমস্যা। অক্ষয় তৃতীয়ায় সে কারণে পুজোও করতে পারলেন না রায়গঞ্জের অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই। তাঁদেরই এক জন, রায়গঞ্জ শহরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী বিপ্লব পালের বক্তব্য, ‘‘লকডাউনের জেরে এক মাস ধরে দোকান বন্ধ থাকায় রোজগার নেই। টাকার অভাবে এ দিন আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোর আয়োজন করতে পারেননি।’’
পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোমের দাবি, লকডাউনে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন রায়গঞ্জের অনেক ব্যবসায়ীই। অনেকে পুজোই করতে পারেননি। কেউ কেউ তা করলেও আয়োজন ছিল সামান্যই।
শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘন হওয়ার আশঙ্কায় অনেকেই এ দিন দোকানের বদলে নিজেদের বাড়িতে পুজো করেছেন। দোকানে করলেও পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে সাটার ছিল নামানো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছ্বুক দেবীনগর ও উদয়পুর এলাকার বাসন ও পোশাকের একাধিক ব্যবসায়ীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার শর্তসাপেক্ষে বিভিন্ন দোকান খোলার নির্দেশিকা জারি করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা না দেওয়ায় ধন্দে পড়েই তাঁরা এ দিন দোকান খুলে পুজো করতে পারেননি। করতে পারেননি হালখাতাও।
ছোট দোকান খোলা যাবে না, শনিবারই তা জেনে যান দক্ষিণ দিনাজপুরের ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের জেরে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনের পরে অক্ষয় তৃতীয়া— দু’বারেই হালখাতা করতে না পেরে বেসামাল দক্ষিণ দিনাজপুরের ব্যবসায়ীরা। প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ে দিশাহারা বস্ত্র, মনিহারি, বাসন ও অন্য নানা সামগ্রী বিক্রেতারা।
বালুরঘাট শহরের নিউমার্কেট এলাকার কাঁসা-পিতল এবং পোশাক বিক্রির দোকানিরা জানান, শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকার কথা জেনে দোকান খুলে পুলিশের ধমক খেতে হয়। ফলে রবিবার দোকান খুলে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করতে ভরসা পাননি অনেকেই। ডানলপ মোড়ের বড় বস্ত্র বিপণির মালিক শ্যামল চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘হালখাতায় ক্রেতাদের সারা বছরের কেনাকাটা বাবদ বকেয়া টাকার অনেকটা ঘরে আসে। কিন্তু এ বার তা হল না।’’ মহাজনের ধার শোধ করে কী করে নতুন মালপত্রের জোগান মিলবে, এ দিন তার হিসেব নিয়ে চিন্তায় পড়লেন শহরের দোকানিরা।
একই পরিস্থিতি ইসলামপুরেও। এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকের ব্যবসার পুঁজি পর্যন্ত শেষ হতে বসেছে। ইসলামপুর মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র দামোদর আগরওয়াল বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পরিস্থিতি ভাল নয়। তবে এই পরিস্থিতিতে বিকল্প কোনও উপায় নেই।’’