Coronavirus

‘মা তো সেরে ফিরল, কিন্তু খাব কী’, চিন্তা পরিবারের

রতুয়া-১ ব্লকের বাহারাল পঞ্চায়েতের রাঘববাটি গ্রামের এক বৃদ্ধার লালারসের নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে ২৮ এপ্রিল। জানা গিয়েছে,  ওই বৃদ্ধা ভিক্ষাবৃত্তি করতেন মহারাষ্ট্রের থানে এলাকায়।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

মালদহ শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২০ ০৬:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা জয় করে শুক্রবার রাতে বাড়িতে ফিরেছেন মা। নাতিরা সেই খুশিতে বাড়ির সামনে বাজিও পুড়িয়েছেন। কিন্তু মা সুস্থ ভাবে বাড়িতে ফিরলেও ছেলের আকুতি, ‘‘বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সপরিবার খাব কী?’’

Advertisement

পরিবারের দাবি, ওই বৃদ্ধা আক্রান্ত হওয়ার পরে প্রশাসন কিছু খাদ্যসামগ্রী দিলেও সে সব ফুরিয়েছে। এখন প্রশাসনের আর দেখা নেই। পঞ্চায়েতে জানিয়েও লাভ হয়নি। ভরসা বলতে রেশন থেকে পাওয়া চাল। এ ঘটনা রতুয়ার বাহারালের রাঘববাটি গ্রামের।

রতুয়া-১ ব্লকের বাহারাল পঞ্চায়েতের রাঘববাটি গ্রামের এক বৃদ্ধার লালারসের নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে ২৮ এপ্রিল। জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা ভিক্ষাবৃত্তি করতেন মহারাষ্ট্রের থানে এলাকায়। ভিক্ষাবৃত্তিতে যুক্ত রতুয়ার ডাকবাংলো মোমিনপাড়ার এক মহিলা মহারাষ্ট্রে মারা গিয়েছিলেন। তাঁর মৃতদেহ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়িতে ফিরেছিলেন ওই বৃদ্ধা। ২৯ এপ্রিল তাঁকে শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দশ দিন পরে শুক্রবার বিকেলে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে তাঁকে শিলিগুড়ি থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে।

Advertisement

বৃদ্ধার ছেলে বলেন, ‘‘আমি ও আমার বড় ছেলে পরিবারের রোজগেরে সদস্য। আমি রিকশাভ্যান চালাতাম। ছেলে দিনমজুর। লকডাউনের পর থেকে দু’জনেই কর্মহীন। প্রশাসনের তরফে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি পেঁয়াজ ও এক কেজি ডাল দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিনেই সেই খাবার ফুরিয়ে যায়। আমরা এখন খাব কি?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মা আক্রান্ত হওয়ার পর আমাদের গ্রাম কন্টেনমেন্ট জোন। আমাদের পরিবারের কাউকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। মাকেও আরও ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। এখন ভরসা শুধু রেশনের চাল। কিন্তু শুধু ভাত কি খাওয়া যায়?’’

এ ব্যাপারে রতুয়া ১ ব্লকের বিডিও সারোয়ার আলিকে কয়েক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধা করোনা জয় করে বাড়িতে ফিরলেন। সেই পরিবারকে এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে না, এটা মানা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন